জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
পদ্মা সেতু আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। এক সময়ের স্বপ্নের সেতু এখন দৃষ্টিসীমায় দিগন্তজুড়ে দাঁড়িয়ে। পদ্মার তীর থেকে দেখা যাচ্ছে পিলারের দীর্ঘ সারি। তার উপর একে একে বসানো হচ্ছে ইস্পাতের কাঠামো (স্প্যান)।
সর্বশেষ বসানো হয়েছে ৩৮তম ওয়ান-এ স্প্যান। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৫ হাজার ৭০০ মিটার। বাকি আছে আর তিনটি স্প্যান। সেগুলো বসলেই ছুঁয়ে দেখা যাবে বহুল কাঙ্ক্ষিত সেতু।
সবকিছু ঠিক থাকলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের জুনে উদ্বোধন হচ্ছে স্বপ্নের সৌধ। উদ্বোধনের পর থেকেই শুরু হবে স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। সময়কে উপেক্ষা করে সেতু দিয়ে ছুটবে বাস, ট্রাক, ট্রেন সব।
সেতুটি চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এতে মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ১ থেকে দেড় শতাংশ বাড়বে। দারিদ্র্যের হার কমবে দশমিক ৮৪ শতাংশ। নতুন করে গড়ে উঠবে ভারি শিল্প কারখানা। আর এরই অপেক্ষায় যেন বাংলাদেশ।
পদ্মা সেতু শুধু রড, সিমেন্ট ও পাথরের সেতু নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৬ কোটি মানুষের আবেগ। চ্যালেঞ্জকে জয় করার অদম্য স্পৃহা এবং আগামীতে দেশের অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার হাতছানি। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক অর্থায়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করার পর সরে যায় আর্ন্তজাতিক আরও তিনটি সংস্থা-এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
এতে পদ্মার আকাশে দেখা দেয় কালো মেঘের ঘনঘটা। ওই সময়ে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। যা ওই বছরের মোট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৫০ শতাংশ। ফলে নাগালের বাইরে চলে যায় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের স্বপ্ন। পরের ইতিহাস সবার জানা। সব বাধা উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দুঃসাহসিক চ্যালেঞ্জ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার।
এতেই কেটে যায় কালো মেঘ, দিগন্ত আলোকিত করে হেসে উঠে সূর্য। সেতু নির্মাণের কর্মযজ্ঞের মধ্যদিয়ে শুরু হয় স্বপ্নের বীজ বোনা। আর সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে ধরা দিচ্ছে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন