উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক বিবাদে আরো ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলেন, সংঘর্ষে জড়িত সুন্নি এবং শিয়ারা সাম্প্রতিক সংঘাতে বারবার যুদ্ধবিরতি আদেশ লংঙ্ঘন করছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ১২৪ জনের প্রাণ গেছে।
পাকিস্তান একটি সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। কিন্তু আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় একটি বড় শিয়া জনসংখ্যা রয়েছে। সেখানে কয়েক দশক ধরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রথম লড়াই শুরু হয়।
পুলিশ এসকর্টের অধীনে শিয়া মুসলমানদের দুটি পৃথক গাড়ি বহরে অতর্কিত হামলায় ৪০ জনের বেশি নিহত হওয়ার পরে সংঘর্ষ শুরু হয়। তারপর থেকে গত ১০ দিন ধরে লড়াই চলছে, ফলে এই অঞ্চলটি স্থবির হয়ে পড়েছে। লড়াইয়ে ভারী অস্ত্রও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রদেশের প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মোবাইল ফোন পরিষেবাও বন্ধ হয়ে গেছে।
গত দুই দিনে আরো ১৩ জন নিহত হওয়ার পর, আজ শনিবার কুররাম জেলার একজন স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা মৃতের সংখ্যা ১২৪ জনে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেছেন। দুইজন সুন্নি এবং ১১ জন শিয়া নিহত হয়েছেন গত দুই দিনে। তিনি বলেন আজ শনিবার সকালে চলতে থাকা নতুন লড়াইয়ে ৫০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি এএফপি-কে বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে আস্থার তীব্র অভাব রয়েছে এবং কোনো পক্ষই এই শত্রুতা বন্ধ করার জন্য সরকারি আদেশ মানছে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘পুলিশ জানিয়েছে, সহিংসতার কারণে অনেক লোক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
কিন্তু অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে এটাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’ প্রাদেশিক সরকার সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করেছিল, কিন্তু তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। আরেকটি ১০ দিনের যুদ্ধবিরতি গত বুধবার ঘোষণা করা হলেও কোনো লাভ হয়নি।
পেশোয়ারের প্রাদেশিক রাজধানীতে একজন সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মোট মৃতের সংখ্যা ১২৪ জন, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘আরো প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রাদেশিক সরকারের গৃহীত কোনো পদক্ষেপই পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।’
কুররামে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ নিয়মিত সংগ্রামের মধ্যে পড়ছে। এটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত ফেডারেল শাসিত উপজাতীয় এলাকার অংশ ছিল। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, এই অঞ্চলে জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে ৭৯ জন নিহত হয়েছে। শত্রুতা সাধারণত পাহাড়ী অঞ্চলে জমি নিয়ে বিরোধ থেকে শুরু হয়।
সূত্র : এএফপি
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন