সিলেটে আদালতে তোলার সময় আসামিদের উপর হামলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আদালত পাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে গোয়েন্দা নজরদারি।
সিলেট মহানগর পুলিশের একটি সূত্র সিলেটভিউকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পুলিশের ঐ সূত্রটি জানায়, আদালতে তোলার সময় গ্রেফতারকৃত আসামিদের পুলিশি পাহারায় থাকা অবস্থায় হামলার ঘটনা খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন এরকম ঘটনা ঘটেছে এবং এর পেছনে কারা আছে সেজন্য ইতোমধ্যেই তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ। তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মাসুদ রানা।
এছাড়া শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দেশের সব আদালত, বিচারকদের এজলাস ও বাসভবন এবং আইনজীবীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের (অতিরিক্ত) দায়িত্ব উপ-কমিশনার (ডিসি-প্রসিকিউশন) বি.এম. আশরাফ উল্যাহ তাহের সিলেটভিউকে বলেন, আদালত পাড়ায় আসামিদের উপর হামলার ঘটনা কোন অবস্থায় অবহেলা করার সুযোগ নেই। যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার পরও কেন এরকম ঘটনা ঘটেছে তা অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি আসামিদের আদালতে তোলার সময়ে আরো সর্তকর্তা অবলম্বন করা হবে।
সর্বশেষ ২৮ নভেম্বর সিলেটের যুবদল কর্মী বিলাল আহমদ মুন্সী (৩৫) হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার তিন আসামিকে সিলেটের আদালতে তোলার সময় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আসামিদের প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর সময় একদল ব্যক্তি আসামিদের মাথা ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে কিল, চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারতে থাকে। কেউ কেউ আসামিদের জুতাপেটাও করেন। এ সময় পুলিশ বিক্ষুব্ধদের ফেরানোর চেষ্টা করে। হামলায় তিন আসামিই আহত হন। গুরুতর আহত প্রধান আসামি শ্রমিকনেতা রুনু মিয়া মঈন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে ২৪ নভেম্বর সিলেট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সামনে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েককে কিলঘুষি ও লাথি মেরেছে কিছু লোক। লায়েকের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে আন্দোলন চলাকালীন নাশকতা, হত্যাচেষ্টা ও হত্যার অভিযোগে আদালত ও থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে।
২৪ আগস্ট সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতে তোলার সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ব্যাপক আক্রমণের শিকার হন। হামলায় গুরুতর জখম হন তিনি। আদালত কারাগারে পাঠালে তাকে সেখান থেকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। শরীরে অস্ত্রোপচার শেষে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখতে হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন