দেশপ্রেমে পরীক্ষায় অজেয় বাঙালি

জীবনের চেয়ে যখন সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তখন সে বোধকে দেশপ্রেম বলে

রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক। |

দেশপ্রেমের পরীক্ষায় এই বাংলাদেশীরা বরাবর অজেয়! নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেয়ে সবসময়ে এরা দেশের স্বার্থকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে। নিজেদের স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নে এরা চিরকাল দুর্বার। এই মাটি থেকে বৃটিশদেরকে খেদিয়েছে, পাকিস্তানকে টিকতে দেয়নি। কাজেই ভারতের আগ্রাসনকেও মেনে নেবে না- এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকুন। বৃটিশদেরকে যখন এই ভূমি থেকে তাড়িয়েছে তখন এদেশীয় বৃটিশদের সমর্থক ছিল। পাকিস্তানের সময়ের গল্পও অনুরূপ। যখন ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে তখনও এদেশে সেদেশীয় দোসররা আছে! 

 

জীবনের চেয়ে যখন সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তখন সে বোধকে দেশপ্রেম বলে। এই দেশপ্রেমকে আবার ঈমানের অংশ বলা হয়েছে। ঈমানী জজবায়, স্বাধীনতা রক্ষার পরীক্ষায় বাংলার আপমর জনতা জীবন থাকতে একবারও ফেল করেনি। কারো সাথে শত্রুতা শুরু করলে তাকে দেখে না নেওয়া পর্যন্ত যে জাতির জেদ কমে না- সে জাতি বাংলাদেশে বাস করে! এরা প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে তবেই পান্তা ভাত খায়! 

 

আজ বাংলাদেশের আগরতলাস্থ উপহাইকমিশনের সামনে যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। হাইকমিশ কোন দেশের টেরিটরি সেটা ভারতীয়দের জানা উচিত! সীমান্তের ওপারে যে আস্ফালন তা নগ্ন অসভ্যতা। ভারতের কতিপয় মিডিয়া যেভাবে উগ্রবাদকে তোষণ করছে এবং তাতে যেভাবে রসদ ছিটানো হচ্ছে তা শুভের বাতাস বইছে না। নাম শুভেন্দু হলেও অশুভ ইঙ্গিত ছড়াতে তার জুড়ি মেলা গোটা ভারতেই ভার! আমি কখনোই ভারত রাষ্ট্রের বা ভারতীয় সভ্য নাগরিকদের বিরোধী নই তবে ভারতের আগ্রাসনের তীব্রতর নিন্দা জানাই। সাম্প্রদায়িক অ-সম্প্রীতির তীর্থভূমি হিসেবে ভারত নিজেদের ভরাডুবি ত্বরান্বিত করতে চাইছে। এদেশীয় যারা তাদেরকে বাতাস দিচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য ইতোমধ্যেই স্পষ্ট। নেপালের জনগণ থেকে দীক্ষা নেওয়ার আহ্বান রইলো। কাজেই অধিকতর ধৈর্য আমাদের অঙ্গীকার হোক। সহ্যের সীমা ছাড়ালে আসাদের শার্ট শরীরে জড়িয়ে ময়দানে অবতীর্ণের বিকল্প থাকবে না। 

 

ভারত বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কে ঐতিহাসিক ভুল করেছে। রাষ্ট্রের সম্পর্ক হওয়া উচিত রাষ্ট্রের সাথে। অথচ তারা যেটা করেছে এবং যা চাইছে তা বাংলাদেশী তরুণ-তরুণীদের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষার বিপরীত। দু'দেশের সম্পর্কের ইতিহাসের সবচেয়ে পলকা সময় চলছে। ভারতীয় নীতির প্রতি ঘৃণার যে ঢেউ সারা দেশব্যাপী চলছে তা তাঁরা আন্দাজ করতে পারছে কি-না কে জানে! মানুষ যখন মানসিক অসুস্থতায় উপায়হীন হয় তখন নিজ অস্তিত্বে আঘাত করতেও ছাড়ে না। ভারত ও তাদের মিত্রপক্ষ সেটাই করছে এবং চাইছে। 

 

দেশপ্রেমের পরীক্ষায় বাংলাদেশীরা হারবে না। দেশের ভালোবাসায় তেজোদ্দীপ্ত ঈমান ঈসায়ী '২৪ সালে সেটা সাক্ষ্য দিচ্ছে। ধর্ম-জাতি নির্বিশেষে সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ঐক্য হবে। তবে কিছু স্বদেশীয় ঘাতক-দালালও চিহ্নিত হবে। যারা দেশের খেয়ে বিদেশের সাথে পরকীয়া করে তাদেরকে ক্ষমা করা উচিত হবে না। ভারতপ্রীতি বা ভীতি- কোনটাই মেনে নেওয়া হবে না। প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। তাতে যদি প্রতিবেশী কপাট দেয় তবে আমাদেরকেও বাধ্য হয়ে দেয়াল তুলতে হবে। স্বকীয়তা হারানোর চেয়ে একবেলা উপোস থাকা অধিক সম্মানের। ভারত নির্ভর দুনিয়ায় আটকে থাকার দিন ফুরিয়ে গেছে। এখন সাম্যের ও সমতার বাংলাদেশের ট্রেন চলছে।

 

 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন