নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:- নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মিঠাপুর আর্দশ গ্রামের ভিতরে একটি ভূমি খেকো চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে৷ গ্রামের শত বছরের পুরনো সরকারি রাজখাল সহ মুসলমানদের জানাযার নামায পড়ানোর জায়গা জবর দখল করে ভুমি খেকো চক্র কর্তৃক চিহ্নিত কয়েকটি দেহ ব্যবসায়ী (পতিতার) নিকট গ্রামের জানাযার নামায পড়ার জায়গা বিক্রয় করে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘর তৈরী করে বসবাস করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ শুধু তাই নয় অবৈধ ব্যবসায়ী তাদের-ই আরেক সহযোগী জনৈকা হিন্দু মহিলার নিকট এরাবরাক সরকারি নদী হয়ে একটি শাখা রাজখালটি গ্রামের ভিতর দিয়ে আসে। ঐ রাজখালটি গ্রামের রাস্তার পাশে হওয়ায় তা দখল করে গোপনে বিক্রয় করা হয়েছে। এতে ঐ সরকারি রাজখালটিতে গত ৩দিন পূর্বে ট্রাক দিয়ে মাঠি ফেলে সরকারি রাজখালের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে৷ তা দেখে গ্রামের সচেতন নাগরিক বাঁধা দেন, এতে প্রায় ঘন্টাখানেক পর বিক্রয়কারী একই গ্রামের প্রভাবশালী নুরুল হোসেন ও তার লোকজন ঘটনাস্থলে এসে যারা বাঁধা দিয়েছিল তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি সহ সংঘর্ষের চেষ্টা করে। এতে দু'পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঐ দিন রাতেই তা সমাধানের লক্ষ্যে কথা বলে পরিবেশ শান্ত হয়। কিন্তু এসব বিষয়ের কোন তোয়াক্কা না করে পরদিন আবারো বেড়া ও মাঠি ভরাট করতে শুরু করে। এতে গ্রামবাসী সহ আশপাশ এলাকার লোকজনের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করলে, তারা সবাই এক জোট হয়ে উক্ত সরকারী রাজখালে বাঁশের বেড়া তুলে নেন। এবং নিষেধ করেন যে, এই সরকারী খালে যেন কেউ আর মাঠি ভরাট বা ঘর বাড়ি তৈরী না করে,এতে সরকারি সম্পদ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু কে শুনে কার কথা। এই গ্রামে রয়েছেন, সাবেক ও বর্তমান প্রফেসার, ব্যাংকার, সাংবাদিক, ডাক্তার, শিক্ষক, শিক্ষিকা, ব্যাবসায়ী, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মী সহ সকল শ্রেণি পেশার লোকজন সম্মানের সাথে বসবসা করে আছেন। এমন কি ঐ গ্রামের বিভিন্ন মানুষ জীবিকার তাগিদে বিশ্বের নানান দেশে বসবাস করছেন।
অবশেষে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে গ্রামবাসী গণ স্বাক্ষর করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারবরে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরো জানাযায়, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মধ্যে আউশকান্দি ইউনিয়নের একটি আদর্শ গ্রাম হচ্ছে মিঠাপুর। গত কয়েক বছর ধরে একই গ্রামের মৃত ফটিক মিয়ার পুত্র নুরুল হোসেন মিঠাপুর আর্দশ গেইটের পাশে একটি বাসা বানিয়ে স্বামী পরিত্যক্ত মহিলাদের ভাড়া দিয়ে দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়টি গ্রামের সচেতন মহলের নজরে পড়লে তারা বিভিন্ন সময় বাঁধা বিপত্তি দিলেও কোন কাজের কাজ না হওয়াতে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করলে তারা কয়েকবার রাতে অভিযান চালিয়ে বাসার মালিক নুরুল হোসেন সহ আরো কয়েকটি বাসায় অভিযান চালায় এবং বাসা ও কলোনির মালিকদের এসব না করার জন্য হুশিয়ারি করে যান। এরপর ঐ সকল মহিলাদের নামে মাত্র বের করে দেওয়া হয়। পরে ঐ পতিতারা আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারে অন্যান্য বাসায় ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। সেখানে কিছুদিন থাকার পর ঐ গ্রামের মৃত গফুর মিয়ার স্ত্রী রাহেনার মাধ্যমে অল্প বয়সী যুবতি মেয়ে ও স্বামী পরিত্যক্ত মহিলাদের দিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে ও রাতে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনতাবস্থায় স্থানীয় জনতা তাদের এহেন কর্মকান্ড দেখে প্রতিবাদ মূখর হয়ে ওঠেন। পরে সে সকল বাসা ও কলোনির মালিকরাও তাদেরকে বের করে দেয়। এরপর স্থানীয় পতিতা রাহেনার মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে নিজ বাড়ি ঘর রেখে বাজার এলাকার বিভিন্ন কলনিতে ভাড়া করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দু- মুসলিম সুন্দরী যুবতি ও স্বামী পরিত্যক্ত মহিলাদের দিয়ে রমরমা দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যবসাটি কোন পুজি ছাড়া হয়ার কারণে তারা রাতারাতি কয়েক লক্ষাধীক টাকার মালিক হয়ে যায়। এতে তারা এলাকার কিছু নারী লিপ্সুদের আতাঁত করে ঐ গ্রামের ২/১ জনের কাছ থেকে জানাযার নামাজের জায়গা সহ মিঠাপুর মৌজার ১নং খতিয়ান, সাবেক জে এল নং ১২৩, সাবেক দাগ নং ২৩৪ এর সরকারি রাজখাল দখল করে দখলবাজরা ঐ সকল পতিতাদের কাছে বিক্রয় করে।
এতে ঐ গ্রাম এলাকার বিভিন্ন বাসা ও কলনিতে ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে দেহ ব্যবসায়ী রাহেনার মাধ্যমে লাকী রানী ও গীতা রানী সহ আরো ৫/৬ জন। কিছুদিন পূর্বে মধ্যে রাতের দেহ ব্যবসার টাকা নিয়ে ঝগড়া ঝাটি হলে লাকী রানী বাদী হয়ে হবিগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। এ মামলার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের বিষয়টি মিমাংশা করে আপোষে ঐ মামলাটি আদালত থেকে তুলে আনে। এরপর থেকে স্থানীয় নারী লিপ্সুদের আতাত করে ঐ পতিতারা অল্পদিনে অবৈধ পথে দেহ ব্যবসা করে মিঠাপুর গ্রামের মৃত ফটিক মিয়ার পুত্র নুরুল হোসেন ও তার ভাতিজা মৃত আবুল হোসেনর পুত্র জুয়েলের মাধ্যমে পতিত জায়গা, জানাযার জায়গা সহ সরকারী রাজখাল দখল করে বিক্রয় করে পতিতাদের স্থানীয় ভাবে দেহ ব্যবসার জন্য অবৈধ স্থান করে দিয়েছে।
এতে ঐ সরকারি রাজখালের চতুর দিকে বাঁশের বেড়া ও মাঠি ভরাটের জন্য কাজ করতে দেখে ঐ গ্রাম ও আশপাশ এলাকার লোকজন সহ বাজার এলাকার মানুষের মধ্যে নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে কেউ কেউ বাঁধা দিতে গেলে দখলবাজ নুরুল গংদের ঘটনাস্থলে সে সময় না পেলেও পতিতাদের পাওয়া যায় খাল ভরাট ও বাশেঁর বেড়া দেয়ার কাজ করতে। এতে তাদেরকে বলা হয় যে, এই জায়গা তো আমাদের রাজখাল। তুমাদের কাছে এই জায়গা কে বিক্রয় করছে? উত্তরে তারা বলে এসব কিছু জানিনা, আমরা টাকা দিয়ে নুরুল ভাইর কাছ থেকে কিনেছি! আমরা এই জায়গা কেনার সময় আমাদেরকে বলা হয়নি এটা সরকারি জায়গা বা রাজখাল। এ ঘটনার প্রায় ঘন্টাখানেক পর নুরুল ও তার লোকজন ঘটনাস্থলে এসে যারা বাঁধা দিয়েছিল তাদেরকে খুঁজতে থাকে হামলা করার জন্য। এমব কি নানান রকমের খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে! এসময় উপস্থিত অনেকেই এর প্রতিবাদ করলে অনেকের সাথে বাক বিতন্ডা হয়। কিন্তু নুরুলের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে চায়না, কারণ যে বা যাহারাই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বা করতে চায় সে ঐ সকল পতিতা যুবতি নারী দিয়ে মিথ্যা মামলা সহ নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস করতে পারেনা। কিন্তু ঐ গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী যাওয়া আসায় এসব দেখে তারা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই গ্রামের অনয়ান্য সকল শ্রেণী পেশার লোকজন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে কোন সংঘাতে না গিয়ে বাঁধা দেন। এবং গ্রামের ইজ্জত সম্মান সহ তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎতের কথা চিন্তা করে নানান দু:চিন্তায় পড়েন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিঠাপুর গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংখা করছেন এলাকাবাসী। অন্যদিকে পতিতার দালাল নুরুল গংরা প্রকাশ্যে বলে বেড়ায় যে, যে বা যারা আমার ভাড়াটিয়া ও জায়গা বিক্রয়ে বাঁধা দিচ্ছে আমি তাদেরকে দেখে যে তাদের কত টাকা রয়েছে। প্রয়োজনে ঐ মহিলাদের দিয়ে আদালতে মামলা করার হুমকিও দেয়। এ ঘটনায় ঐ গ্রামে গত ৪দিন ধরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঐ এলাকার লোকজন নানান আতংকে দিন যাপন করছেন।
এ ব্যাপারে প্রশাসন তড়িৎ গতিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সরেজমিনে এসে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এলাকাবাসী জোর দাবী জানান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন