গুম হওয়া সকলকে পরিবারের নিকট ফেরত দিন : গোলাম মোস্তফা

পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদী সরকারের সময় গুম হওয়া সকলকে পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ফ্যাসীবাদের পতন হলেও গুম হওয়া ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাজ্জাদ হোসেন সুমনের পরিবার এখনো পথ চেয়ে আছে। গুম হওয়া প্রত্যেক ব্যক্তিকে দ্রুত খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া সরকারের দায়িত্ব। আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে গুম হওয়া পরিবারকে ?

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর খুনী শামীম এখনও কিভাবে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। মাসুম মিয়ার হত্যার এতদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কেন খুনীদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তিনি শামীম আহমেদ ফয়েজকে দ্রæত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, গুম ও অপহরণকৃত ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে জীবন-যাপন করছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য হাসিনা সরকারের নিকট বারবার আবেদন-নিবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। আমরা আশা করি, বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত খুঁজে বের করে তাদের পরিবার-পরিজনদের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন এবং গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, গুমের শিকার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ দিন ধরে তাদের কষ্টের কথা বলছে। যারা গুমের জন্য দায়ী, জাতি তাদের কমবেশি চিনে। যারা দায়িত্বে ছিলেন, র‌্যাবের দায়িত্বে ছিলেন, পুলিশের বিশেষ বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন, তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে। ফ্যাসিবাদকে রক্ষা করার জন্য যারা কাজ করেছিল তারা এখনো রাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় আছে। সরিষার মধ্যে ভূত রেখে এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার কোনো কিছু অর্জন করতে পারবে না।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর সাবেক বৃহত্তর তেজগাঁও থানার ৩৮নং ওয়ার্ড বর্তমান ২৫নং ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমন, মেধাবী ছাত্র জাহিদুল করিম তানভীর, মেধাবী ছাত্র আব্দুল কাদের ভূইয়া মাসুম, মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আসাদুজ্জামান রানা, আল আমিন, এস এম আদনান চৌধুরী ও গাড়ী চালক কাউসার কে র‌্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে গুম করে। দেখতে দেখতে এক যুগ পার হয়ে যাওয়ার পরেও স্বাধীন বাংলাদেশে এখনও কেউ ফিরে আসেনি যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক ও জাতির জন্য লজ্জার।

তিনি বলেন, ৩৬ শে জুলাই শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মুগ্ধসহ সহশ্র রক্তের উপর দাঁড়িয়েছে যে বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশে এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় শক্ত অবস্থানে থাকার কারণে গুম হওয়া কারো কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ এটি আমাদের প্রত্যাশা ছিল না। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম ফ্যাসিবাদের প্রতিটি দোসরকে শাস্তিরর আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখী করা হবে। অথচ তারাই এখনও রাম রাজত্ব করছে এবং তাদেরকে উস্কে দিচ্ছে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও ভারত সরকার, উগ্রবাদী এক শ্রেণীর হিন্দু জনগোষ্ঠী। তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নানারকম ষড়যন্ত্র করছে।

জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সভাপতি মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা'র সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় জনতা ফোরামের সভাপতি মোঃ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, সংগঠনের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেল্লাল হোসেন রাজুসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

আগামী ৯ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির উদ্যোগে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী সফল রেমিট্যান্স যোদ্ধা মোঃ রাসেল মাহমুদ ও নোবেল মাহমুদ এবং তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও ১০ই ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এবং বিকেলে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন