গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬১তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ ৫ ডিসেম্বর ,বৃহস্পতিবার

হাকিকুল ইসলাম খোকন,, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬১তম মৃত্যু বার্ষিকী বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪। উপ মহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা, মহান স্বাধীনতার স্বস্পতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক পিতা হিসাবে সু-পরিচিত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬১তম মৃত্যু বার্ষিকী। তিনি ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লেবাননের বৈরুতে একটি হোটেল কক্ষে নিঃসঙ্গ অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকার সুপ্রিমকোর্টের পাশে তিন নেতার মাজারে তার সমাধি রয়েছে।

১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের খ্যাতনামা বিচারক স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দীর কনিষ্ঠ সন্তান। শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি মুসলিম লীগ সরকারের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করেন। তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতাই নন, তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়কও। তার প্রচেষ্টায় ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণীত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর বাঙালির যে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল, তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার ফল ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট এবং অবিস্মরণীয় বিজয়। গণতান্ত্রিক রীতি ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকায় সুধীসমাজ তাকে ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ বলে আখ্যায়িত করে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন একজন উদার ও প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ। সাধারণ মানুষের প্রতি তার ছিল অকৃত্রিম মমত্ববোধ।

তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি বিকাশে এবং এ অঞ্চলের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সারাজীবন কাজ করেছেন। গণতান্ত্রিক রীতি ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এ উপমহাদেশের মেহনতি মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের গণবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষকে সোচ্চার ও সংগঠিত করেছিলেন।সাবেক রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী ছিলেন প্রতিভাবান রাজনীতিক, আইনজ্ঞ, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা ও গণপরিষদের সদস্য এবং অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীসহ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি শ্রমজীবীসহ এতদঞ্চলের অবহেলিত মুসলিম সমপ্রদায়ের স্বার্থরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে নাবিক, রেলকর্মচারী, পাটকল ও সুতাকল কর্মচারী, রিকশাচালক, গাড়িচালকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মেহনতি মানুষের স্বার্থরক্ষায় বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলেন।

এডভোকেট আব্দুল হামিদ বলেন, সোহ্‌রাওয়ার্দী আমৃত্যু আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী গণতন্ত্রের বিকাশসহ এতদঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যে অবদান রেখে গেছেন জাতি তা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। তার জীবন ও কর্ম আগামী প্রজন্মকে গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা ও জনগণের সার্বিক কল্যাণে উদ্বুদ্ধ করবে।

এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী ছিলেন একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক। একজন প্রতিভাবান রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবে তার দক্ষ পরিচালনায় গণমানুষের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আরও বিকশিত হয়। তার সুযোগ্য উত্তরসূরি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর দূরদর্শী নেতৃত্ব পাকিস্তান সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী উপমহাদেশের মেহনতি মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি ছিলেন একজন উদার ও প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীসহ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি ছিলেন অসামপ্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ এবং সাধারণ মানুষের প্রতি তার ছিল অকৃত্রিম মমত্ববোধ।

তিনি বলেন, ‘১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের গণবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষকে সোচ্চার ও সংগঠিত করেছিলেন। গণতান্ত্রিক রীতি ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বের অসাধারণ বলিষ্ঠতা, দৃঢ়তা ও গুণাবলি জাতিকে সঠিক পথের দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন। বিবৃতিতে তিনি গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় স্পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনসমূহের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উপমহাদেশে রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র :
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এদিন সকাল ৯টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দীর মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে । আমেরিকা-বাংলাদেশ এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক এমএ সালাম বাপসনিউজকে এক বিবৃতিতে মরহুম হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তার নেতৃত্বের অসাধারণ বলিষ্ঠতা, দৃঢ়তা ও গুণাবলি জাতিকে সঠিক পথের দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন। বিবৃতিতে তিনি গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনসমূহসহ অন্যান্য সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।যুক্তরাষ্ট্রেও অনেক সংগঠন দিবসটি পালন করবে । যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে ৬১তম স্মৃতিবার্ষিকী পালন করবে ।
এ উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র সোহরাওয়ার্দি স্মৃতি পরিষদ, শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্র , বঙ্গবন্ধু প্রচার কেন্দ্র ও সমাজ কল্যাণ পরিষদ , বনলতা শিল্পী ,সাহিত্যিক ও সাংবাদিক গোষ্ঠী এবং শেখ হাসিনা মন্চসহ বিভিন্ন সংগঠন বিশেষ আলোচনা সভা ও প্রার্থনার আয়োজন করেছে ।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন