দক্ষিণ এশিয়ায় সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র হবে ঢাকা : নাহিদ ইসলাম

gbn

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘ঢাকাকে দক্ষিণ এশিয়ায় শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রবিন্দু করে গড়ে তোলার স্বপ্ন রয়েছে।’ 

শুক্রবার ১৭তম বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বপ্ন রয়েছে, ঢাকা শুধু বাংলার নয় পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। বাংলাদেশ বহু ভাষা ও সংস্কৃতির চারণক্ষেত্র হবে।

এই স্বপ্নকে ধরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে নতুনভাবে দেখতে চাই।’ 

 


 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘চলচ্চিত্র জগতে নানা ধরনের সমস্যা ও স্থবিরতা রয়েছে। সরকারের জায়গা থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে চাই। এজন্য অভিজ্ঞ ও দক্ষ মানুষের নেতৃত্ব জরুরি।

’ 

 

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একাত্তরে যারা যুদ্ধ করেছেন তারা একটা নতুন স্বপ্ন নিয়েই করেছেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি বলেই আরেকটা অভ্যুত্থানের প্রয়োজন হয়েছে। মানুষ রাস্তায় নেমেছে, জীবন দিয়েছে। এবারের অভ্যুত্থানের স্পিরিট বাস্তবায়িত হবে এটাই প্রত্যাশা।

আপনারা জানেন যে, জুলাই অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে অপপ্রচার চলছে। এই অবস্থায় যারা চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে জড়িত তাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থান সাধারণ শিক্ষার্থী ও গণমানুষের যে অংশগ্রহণ সেটা চলচ্চিত্রে ফুটে উঠবে, আমাদের একটা ইতিহাস এবং ন্যারেটিভ তৈরি হতে থাকবে আমরা এইটা প্রত্যাশা করি।’ 

 

একাত্তরের ইতিহাস বিকৃত, দলীয়করণ ও কুক্ষিগত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে যেন এমনটা না হয়। দলমত নির্বিশেষে এই অভ্যুত্থানের যে সার্বজনীনতা আমরা চাই তা ইতিহাস আকারে উঠে আসুক।

’ 

 

নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদ বা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে দূর করতে পারলেও সমাজে নানা ধরনের ফ্যাসিবাদি প্রবণতা এখনও রয়ে গেছে। একটা ফ্যাসিবাদি কাঠামোও রয়ে গেছে। ব্যক্তি ও সমাজকে এই প্রবণতা থেকে মুক্ত করতে হলে একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক আন্দোলন প্রয়োজন। অভ্যুত্থানের পর যা এখনও আমরা গড়ে তুলতে পারিনি। সংস্কৃতি মানুষের মনোজগতের পরিবর্তন ঘটাতে পারে, রুচির পরিবর্তন ঘটাতে পারে।’ 

জুলাই অভ্যুত্থানের এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘ছাত্রদের মধ্যে এখনও অস্থিরতা কাজ করছে। তারা অনেক কিছু করতে চাইছে। দেশের ঝুঁকি নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। এই যে নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনা এটিকে সংস্কৃতিতে রূপান্তর করা আমাদের দায়িত্ব। তাহলেই এই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা দীর্ঘস্থায়ী হবে।’ 

চলচ্চিত্র শিল্পকে যতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার ছিল ততটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের এই মনস্তত্ত্ব পরিবর্তন করতে হবে। সরকার পৃষ্ঠপোষকতা না করলে এই ইন্ডাস্ট্রির দাঁড়ানোটা কঠিন।’ 


 

শতাধিক দেশের ২৭৬টি চলচ্চিত্র নিয়ে উৎসবটি আয়োজন করছে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম। তবে ফোরামেরই একটি অংশ উৎসবকে বয়কট করেছে। 

শুক্রবার বিকেল চারটায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেন- আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, সিটি ব্যাংকের কান্ট্রি বিজনেস ম্যানেজার আশানুর রহমান। জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইমরান হোসেন কিরমানি।

এবারের উৎসবটি জুলাই-আগস্ট অভ্যুথানে শহীদের প্রতি এবং শিল্পী এস এম সুলতানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে উৎসর্গ করা হয়েছে। এবারের আসরের কান্ট্রি ফোকাস হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে ফিলিস্তিন। ২৫ ডিসেম্বর বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টায় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ফিলিস্তিনের আটটি ফিকশন চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

আঞ্চলিক ফোকাস হিসেবে আরব দেশগুলোকে নির্বাচিত করা হয়েছে এবার। ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় জাদুঘরের সিনেপ্লেক্স মিলনায়তনে বেলা ১১টা থেকে ১টা এবং বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৯টি ফিকশন ও একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে।

জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থান নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘দ্য ড্রিম, দ্য ফাইট, দ্য ভিক্টরি’ প্রদর্শিত হবে ২৩ ডিসেম্বর। এর বাইরে একাধিক সেশন রয়েছে। এসব সেশনে নুরুল রাশেদ চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম, রফিকুল আনোয়ার, তারেক আহমেদ, নাঈম মোহায়মেনসহ অনেকে উপস্থিত থাকবেন।

২৭ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী আয়োজন থাকবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন