সেনা অভিযানের প্রভাবেই গাজায় ৬ জিম্মি প্রাণ হারায় : ইসরায়েলি তদন্ত

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক তদন্তে জানা গেছে, গাজা উপত্যকায় রাফা এলাকায় পরিচালিত তাদের অভিযানের প্রভাবেই সম্ভবত হামাস আগস্ট মাসে ছয় জিম্মিকে হত্যা করে। বিবিসি বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘(ওই) অঞ্চলে পরিচালিত ইসরায়েলি স্থল অভিযান, যদিও তা ধীরগতির ও সতর্ক ছিল, তবে তা হামাসকে ছয় জিম্মিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পরিস্থিতিগত প্রভাব ফেলেছিল।’

তদন্তে আরো উঠে এসেছে, রাফা এলাকায় অভিযান শুরুর সময় সেনারা জিম্মিদের উপস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।

পরবর্তীতে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগস্টের শেষ দিকে ইসরায়েলি বাহিনী রাফার তাল আল-সুলতান এলাকায় ভূগর্ভস্থ খাদ থেকে ওই ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করে। সামরিক বাহিনী তখন জানায়, সেনারা সেখানে পৌঁছনোর ঠিক আগেই হামাস তাদের হত্যা করে।

 

এ ছাড়া ইসরায়েলের চিফ অব দ্য জেনারেল স্টাফ এই ঘটনাকে ‘কষ্টদায়ক ও মর্মান্তিক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘এটি ছিল হামাসের হাতে ছয় জিম্মির নির্মম হত্যার একটি চরম দুঃখজনক ফলাফল।

 

অন্যদিকে এই হত্যাকাণ্ড ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারকে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার দাবি জানায়।

হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরামের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই তদন্ত আবারও প্রমাণ করে, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় যাদের জিম্মি করা হয়েছিল, তাদের মুক্তি শুধু একটি চুক্তির মাধ্যমেই সম্ভব। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ বলে সমালোচনার মুখে রয়েছে।

সরকার তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও এখনো কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি।

 

হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ১৪ মাসের যুদ্ধে ৪৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, প্রায় ২০ লাখ মানুষ, বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ।

জাতিসংঘ ও সাহায্য সংস্থাগুলো গাজার পরিস্থিতিকে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে বর্ণনা করে বারবার সতর্ক করেছে, গাজার জনগণ ‘দুর্ভিক্ষের কিনারায়’ রয়েছে।

তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা সাহায্য সরবরাহে কোনো বাধা দেয়নি।

 

২০২৩ সালের হামাসের হামলায় ২৫১ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিক জিম্মি হয়েছিল বলে ইসরায়েলের দাবি। তাদের মধ্যে ৯৬ জন এখনো জিম্মি আছে বলে জানা গেছে, যার মধ্যে ৬২ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে জিম্মিমুক্তি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। নেতানিয়াহু সম্প্রতি জানিয়েছেন, আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে কবে এই আলোচনা শেষ হবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন