বেনাপোল চেকপোস্টে বসছে ভারতীয় কম্বলের হাট, সাথে আসছে অবৈধ পন্য

বেনাপোল প্রতিনিধি : যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন অবাধে আসছে ভারতীয় কম্বল। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিন চেকপোস্ট এলাকায় বসছে এসব ভারতীয় কম্বলের হাট। প্রতিটি কম্বল বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে চার হাজার টাকায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোর, খুলনাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার শত শত নারী-পুরুষ প্রতিদিন বেনাপোলে আসেন এসব কম্বল কিনতে। কম্বল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ভারত-বাংলাদেশের সহস্রাধিক পাসপোর্টযাত্রী লাগেজ ব্যবসায়ীরা। উভয় দেশের প্রশাসনের সহযোগিতায় চলছে এ ব্যবসা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র কম্বল ব্যবসার সঙ্গে প্রতিদিন মাদকদ্রব্য, মোবাইল ও বিভিন্ন অবৈধপণ্য আনছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিনা শুল্কে অবৈধ পণ্য দেশে প্রবেশ করায় মারাত্মক হুমকির মুখে দেশীয় শিল্প। স্থানীয় ল্যাগেজ ব্যবসায়ীরা কাস্টমস কর্মকর্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের ‘ম্যানেজ’ করে রমরমা ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন এ অবৈধ ব্যবসা। এতে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন হাট বসছে বেনাপোল চেকপোস্ট সাদীপুর মোড়ে, রাস্তার ওপর, ফুটপাতের ওপরে এবং বিভিন্ন দোকানের সামনে। পাচার হয়ে আসা ভারতীয় এসব কম্বল কেনার জন্য নারী-পুরুষ আসেন ঢাকা, খুলনা, নড়াইল, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, ঝিনাইদহসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে। কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এর রমরমা বেচাকেনা। তবে নারী ক্রেতারা বেশি জড়িত এই ব্যবসায়।
নিরাপদ বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বেনাপোল-খুলনা ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ও বেনাপোল-ঢাকাগামী ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেন। স্থলবন্দর বেনাপোল থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া সকাল ও বিকেলে দুটি ডাউন ট্রেনের বগিতে ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয় এসব কম্বল।
চেকপোস্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ভিসা প্রদান না করায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার যাত্রীর সংখ্যা অনেকাংশে কমলেও ভারত থেকে প্রতিদিন ৫-৭শ’ ভারতীয় নাগরিক পাসপোর্টের মাধ্যমে বিজনেস ভিসায় বেনাপোল সীমান্তে প্রবেশ করছেন। এদের ভিসা দিচ্ছে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন।
বেনাপোল সীমান্তের ওপারে ভারতের বনগাঁ, অশোকনগর, হাবড়া, হরিদাসপুর, জয়ন্তীপুর ও পেট্রাপোলে সক্রিয় রয়েছে একটি সঙ্ঘবদ্ধ পাচারকারী সিন্ডিকেট। ভারতীয় বিজনেস ভিসাধারী যাত্রীরা প্রতিদিন একেকজন ১০-১৫টি করে কম্বলসহ বিভিন্ন কসমেটিক সামগ্রী নিয়ে এসে বাংলাদেশের বেনাপোল চেকপোস্টে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত নারীদের কাছে ও বিভিন্ন দোকানে বেচে দেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তারা আবার নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। বিজনেস ভিসা থাকায় এদের যাতায়াতে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি। পাসপোর্টযাত্রীরা কোনো হয়রানির শিকার হলে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। ল্যাগেজ পার্টি বন্ধে আমরা প্রতিনিয়ত চেকপোস্টে মালামাল ডিএমের মাধ্যমে আটক করছি। সেটা পরে যাত্রীরা কাস্টমস হাউজ থেকে শুল্ক দিয়ে ছাড় করে নিচ্ছেন।’
এ বিষয়ে যশোর-৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে বিজিবি দিনরাত নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা পণ্য জব্দ করা হয়। #

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন