ভারতের রাজস্থান রাজ্যের কোটপুতলিতে ১০ দিন ধরে কুয়ায় আটকে থাকা তিন বছরের শিশু চেতনাকে অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। পাঁচবারের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর বুধবার তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল।
চেতনা কোটপুতলির কিরতপুরা গ্রামের বড়িয়ালির ধানি এলাকায় একটি ৭০০ ফুট গভীর কুয়ায় পড়ে গিয়েছিল।
উদ্ধারের পর তাকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মেডিক্যাল অফিসার ড. চেতন্য রাওয়াত জানান, শিশুটিকে হাসপাতালে আনার পর জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং একটি বিশেষ শয্যায় তার পরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শিশুটি বেঁচে নেই বলে ঘোষণা করেন। পরে তার মরদেহ মর্গে পাঠানো হয় এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
এর আগে ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে খেলার সময় শিশুটি কুয়ায় পড়ে যায়। প্রায় ১০ মিনিট পর পরিবারের সদস্যরা তার কান্নার শব্দ শুনে কুয়ার ভেতর তাকে আটকে থাকতে দেখে। এরপর ঘটনাস্থলে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী (ডিআরএফ) ও একটি মেডিকেলদল পৌঁছয়। শুরু থেকেই তাকে উদ্ধার করার প্রচেষ্টা চালানো হয়।
প্রাথমিক প্রচেষ্টায় শিশুটিকে দড়ি দিয়ে ওপরে তোলার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। এরপর অক্সিজেন সরবরাহের জন্য একটি পাইপ ব্যবহার করা হয় এবং উদ্ধারকারীরা খনন কাজ শুরু করে। তবে প্রথমে খনন করা সুড়ঙ্গটি ভুল দিকের হয়ে যায়। শেষ কয়েক ঘণ্টায় শিশুটির কাছে খাবার বা অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই তার অবস্থা সংকটজনক হয়ে পড়ে।
তবে অবশেষে ঠিক সময়ে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
জেলা কালেক্টর কল্যাণী আগরওয়াল জানান, কুয়াটি নির্দিষ্ট গভীরতার পর থেকে বাঁকানো ছিল, যা উদ্ধারকাজে সমস্যার সৃষ্টি করে। উদ্ধারকাজের জন্য অবশেষে দিল্লি ও জয়পুর মেট্রোর বিশেষজ্ঞদের ডেকে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে সুড়ঙ্গটি আট ফুট প্রশস্ত করার পরিকল্পনা ছিল, তবে পরে সেটি ১২ ফুট পর্যন্ত প্রসারিত করা হয় উদ্ধার অভিযান সহজ করার জন্য।
শিশুটির দাদা দয়ারাম প্রশাসন ও উদ্ধারদলের অক্লান্ত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। তারা শীতের মধ্যে কটিন পরিবেশে কাজ চালিয়ে যান। একই সঙ্গে তিনি প্রশাসনের কাছে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য খোলা কুয়াগুলো ঢেকে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন