অপারেশন ক্লিনহার্টের মাধ্যমে বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশে বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয় ‘অপারেশন ক্লিনহার্টের’ মাধ্যমে। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) রাতে টিআইবির অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় ঐক্যজোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে ২০০৩ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ নামে যৌথবাহিনীর ওই অভিযান চালানো হয়েছিল।

 

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মেজর সিনহার মর্মান্তিক বিচার বর্হিভূত হত্যার ঘটনা যেভাবে দেশবাসীকে আলোড়িত করেছে, উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে, পাশপাশি সরকার তথা রাষ্ট্রকে তোলপাড় করে দিয়েছে, সেই হিসেবে বলাই যায়, মেজর সিনহা তার পরিবার ও দেশবাসী একটি ন্যায় বিচার হয়তো পাবে।

তিনি বলেন, এই ন্যায়বিচারটি যদি হয়, যেটি হচ্ছে, সেটি আশা করা যায়। তবে বিচার বর্হিভূত হত্যা অগ্রহণযোগ্য, সে কারণে যতটুকু, তার চেয়ে বেশি এই হত্যার শিকার যে ব্যক্তি তার অবস্থান ও পরিচয়ের কারণে বিচার কার‌্যক্রমটি হচ্ছে। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত যে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অবস্থানের কারণে কার্যক্রমটি হচ্ছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিচার বর্হিভূত হত্যার যে সংস্কৃতি বাংলাদেশে প্রায় দুই দশক ধরে চলছে, যেটি শুরু হয় অপারেশন ক্লিনহার্ট নামে। পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্যায়ে এটিকে বিকশিত হতে দেওয়া হয়েছে। সেটি তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে-ভিকটিম প্রতিষ্ঠান, অভিযোগকারীর অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং যারা অনুসন্ধাকারী; এই তিনটি প্রতিষ্ঠানেরই তাদের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চার মূল ধারার অংশ হিসেবে তারা রুপান্তরিত হতে দিয়েছে। এটা তারা উপভোগ করেছে। এটা তারা ব্যবহার করেছে, চর্চা করেছে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়, নির্দেশনায় অনেক সময়, যোগসাজশে। কাজেই একটি ঘটনা এবং তার ফলে একে কেন্দ্র করে একটি ন্যায়বিচার বা একাধিক ন্যায়বিচার যদি হয়ও, তাহলে সেটি আমাদের দেশ থেকে বিচারবর্হিভূত হত্যার সংস্কৃতিকে মূলোৎপাটনের দিকে নিয়ে যাবে, এই আশা করতে পারি বলে ভাবাটা খুবই কঠিন।

তিনি আরও বলেন, বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব, যদি একটি উপলব্ধি হয়- এই যে ফ্রাঙ্কেস্ট্রাইনকে জন্ম দেওয়া হয়েছে, এবং বিকবিশত হতে দেওয়া হয়েছে, তার শক্তি অর্জন করার সামর্থ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছে; সেই ফ্রাঙ্কেনস্টাইনকে যারা জন্ম দেয়, বিকশিত হতে দেয়, তাদের জন্য আত্মঘাতি হয়। এই উপলব্ধিটা যখন হবে যদি হয়, তার উপর নির্ভর করে, যে সংস্কার রাজনৈতিক অঙ্গণে, প্রশাসনিক অঙ্গণে, সরকারি অঙ্গণে এবং বিশেষ করে তিনটি প্রতিষ্ঠানে যে প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা, সেখানে যদি মৌলিক প্রক্রিয়াকে ঢেলে সাজানো না হয় এবং জবাবদিহিতা বাস্তবে নিশ্চিত করা না হয়, তাহলে এটি আশা করা খুব কঠিন।

তিনি বলেন, একটি ঘটনার মাধ্যমে মেজর সিনহার নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। কিন্তু এর মাধ্যমে বিচার বর্হিভূত হত্যার সংস্কৃতির বিলুপ্তি ঘটবে, সেটি আশা করা সত্যি খুব কঠিন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন