কাঁটাতারে ফেলানীর লাশ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক: জয়নুল আবদীন ফারুক

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। এই ছবি শুধু ফেলানীর লাশের ছবি নয়, এই ছবি কাঁটাতারে বিদ্ধ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব। এই ছবি নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও রাজনীতিকদের ভারত তোষণনীতির বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার।

আজ ৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)  দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ফেলানী হত্যা দিবসে সীমান্ত আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, ফেলানী হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি দাবি করি, তা না হলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে না। বাংলাদেশের নাগরিকদের বিএসএফ বিনা বিচারে হত্যা করে। যা অমানবিক। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্ত্রহাতে ভারতীয় বিএসএফ বারবার ঢুকে পড়ে, যা আমাদের সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লংঘন। সার্বভৌমত্বের লংঘন স্বাধীনতার লংঘন। ভারতের সঙ্গে চীন, মিয়ানমার, নেপালা, ভূটান, পাকিস্তানের পারস্পরিক সীমান্ত থাকলেও শুধু বাংলাদেশ সীমান্তে তারা অমানবিকভাবে সীমান্ত হত্যা করে। যা খুবই দুঃখজনক, ন্যক্কারজনক মানবতা বিরোধী অপরাধের শামিল।

কুড়িগ্রামে ফুলবাড়ী সীমান্তে বিনা উস্কানিতে বিএসএফ বাবার সামনে শিশু কন্যা ফেলানীকে হত্যাসহ সারা বছর সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের হাতে নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যার উদ্বেগ জানিয়ে জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, এই ঘটনা ভারতের আগ্রাসী চরিত্র। ভারতকে সীমান্ত আগ্রাসন, বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা ও বাংলাদেশের রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ভারত তোষণনীতির কারণেই সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই ভারত সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসন সম্পর্কে পতিত আওয়ামী সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য শুনে মনে হতো, তারা বাংলাদেশের মন্ত্রী নয়, তারা ভারতীয় জনপ্রতিনিধি।

ডাঃ ইরান আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বিগত সরকার দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সীমান্তে বাংলাদেশি জনগণ স্বাধীন ভূখণ্ডে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও কৃষি কাজ করতে পারছে না। ৭ জানুয়ারি ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা। শহীদ ফেলানী দিবসে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, খুলনা মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ একেএম সাইফুদ্দোহা, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব আবদুর রহমান খোকন, মুফতি তরিকুল ইসলাম সাদী, তরুনদলের সিনিয়র সহ সভাপতি টি এইচ তোফা, গণফোরাম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, লেবার পার্টির প্রচার সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, দফতর সম্পাদক মোঃ মিরাজ খান, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক আহমেদ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, সহ সভাপতি মাসুদ আলম পাটোয়ারী, ডাঃ ইউসুফ আলী, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মোঃ মিলন, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও মহানগর আহবায়ক রায়হান উদ্দিন সনি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হাতে নির্মম হত্যার শিকার বাংলাদেশের ফেলানীর হত্যা দিবস ৭ জানুয়ারিকে জাতীয়ভাবে ফেলানী দিবস পালন ও ভারতীয় দূতাবাসের সড়কের নাম ‘ফেলানী সড়ক’ নামকরণের দাবি জানান।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন