হিম হিম কুয়াশার আবরণে ষড়ঋতুর পরম্পরায় বাংলার প্রকৃতিতে আজ ফিরে আসে পিঠা পার্বণের উৎসব। আবারো নতুন ভাবে জেগে ওঠার আহ্বানে আজ (১০ জানুয়ারি) সুবিদবাজারস্থ ব্লু বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে প্রতিবারের মতো ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রুতি সিলেট আয়োজন করেছিল দিনব্যাপী পিঠা উৎসব ১৪৩১ বাংলা।
এবার ছিল শ্রুতি পিঠা উৎসবের চর্তুবিংশতম আয়োজন। দিনব্যাপী আয়োজনের প্রথম অধিবেশন উদ্বোধন করেন বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী ও সংগঠক মোকাদ্দেস বাবুল। প্রভাতি আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিৎ সিংহ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রুতি সদস্য সচিব সুকান্ত গুপ্ত। আরো উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবির অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায়,রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী এবং সংগঠক রানা কুমার সিনহা, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শামসুল বাসিত শেরো, আমিরুল ইসলাম চৌধুরী বাবু প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শীত এলেই দিগন্তজোড়া প্রকৃতি হলুদ-সবুজ রঙে ছেয়ে যায়। পাকা ধানের পাশাপাশি প্রকৃতিকে রাঙিয়ে দেয় গন্ধরাজ, মল্লিকা, শিউলি, কামিনী, হিমঝুরি, দেব কাঞ্চন, রাজ অশোক, ছাতিম আর বকফুল। এই শোভা দেখে আনন্দে নেচে ওঠে কৃষকের মন। নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করা হয় পিঠা, পায়েস, ক্ষীরসহ হরেক রকম খাবার। সোনালি ধানের প্রাচুর্য আর বাঙালির বিশেষ অংশ নবান্ন জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ফুটে ওঠেছে অনন্য মহিমায়।
দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আরিফুল হক চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন শ্রুতি পিঠা উৎসবের মাধ্যমে নগরে যে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় তা আমাদের নগরবাসির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোলাহল পূর্ণ নগরের নগরবাসি একটি দিন উৎসবে আনন্দে আবহমান সংস্কৃতির সাথে এক হয়ে যায়।
দিনব্যাপী আয়োজনে সমবেত পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করে - ছন্দনৃত্যালয়,গীতবিতান বাংলাদেশ,জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ সিলেট, রবীন্দ্র সংগীত শিল্পীসংস্থা,দীপশিখা,দ্বৈতস্বর,পাঠশালা,আনন্দলোক,মুক্তাক্ষর,সংগীত নিকেতন,সুরের ভূবন,নৃত্যাঞ্জলি, নৃত্যশৈলী,অনির্বান শিল্পী সংগঠন,ললিত মঞ্জরি, নৃত্যরথ,সুর সপ্তক,নৃত্যাঞ্জলি প্রমুখ। আমন্ত্রিত সংগীতশিল্পী হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাউলা কানু, শামীম আহমেদ,বাউল সূর্যলাল, এস এম শাহাজাহান ,প্রদীপ মল্লিক, খোকন ফকির,অরুনিমা দাশ, পল্লবী দাশ মৌ,আশরাফুল ইসলাম অনি, তৃষা দাশ প্রমুখ।
দিনব্যাপী পিঠা প্রতিযোগিতায় প্রায় অর্ধ শতাধিক স্টল অংশ নেয়। বাহারী রকমের পিঠার পসরা সাজিয়ে তারা বসেন। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে গিয়েছিল পিঠা উৎসবের দিনব্যাপী আয়োজনে। ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব ঘিরে নগর জুড়ে ছিলো উৎসব উৎসব আমেজ। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পিঠা উৎসবের ত্রয়োবিংশ তম আয়োজন শেষ হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন