তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হচ্ছে মনন বিকশের একটা মাধ্যম। এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সাথে পরিচিত হতে পারি তাদের ফিল্ম দেখার মাধ্যমে। তাদের দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারি।’
‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ এ প্রতিপাদ্যে শুরু হয়েছে ২৩ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। আজ (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৪ টার দিকে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধনী বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস, সংস্কৃতি- সেগুলো আপনারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে তুলে ধরুন, তাতে বাংলাদেশের শিল্প সংস্কৃতিক বিকাশ ঘটবে। আর সেখানে সিনেমা একটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
এর আগে বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনা চলচ্চিত্রের পোস্টার প্রদর্শনী কর্নারের উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিশেষ অতিথি চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং চীনা চলচ্চিত্র প্রশাসনের আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক শু ইয়াং।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও উৎসব কমিটির নির্বাহী সদস্য জালাল আহমেদ এবং উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে এবারের উৎসবে ৭৫ দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে বলে জানা গেছে। পৌষের শেষ বিকেলে উৎসব ঘিরে ছিল চলচ্চিত্রপ্রেমীদের ভিড়।
উদ্বোধনী আয়োজনে সংগীত পরিবেশন করে জলের গান। পরে উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে দেখানো হয় চীনা নির্মাতা চিউ ঝ্যাংয়ের ছবি ‘মুন ম্যান’।
এ বছর উৎসবের কান্ট্রি ফোকাস চীন। উৎসবে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেন ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্ম, শর্ট অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেনস ফিল্ম মেকারস সেশনে পূর্ণ ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখানো হবে। এশিয়ান সিনেমা প্রতিযোগিতা বিভাগে থাকছে ১৭ চলচ্চিত্র। রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগে থাকছে রাশিয়ার নির্মাতা এলেক্সি ফেডরচেনকোর চলচ্চিত্র। বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে দেশের ১০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। ওয়াইড অ্যাঙ্গেল বিভাগে চীনের থাকছে ১৫টি চলচ্চিত্র। সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড বিভাগে ৪৩ দেশের ৩৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। চিলড্রেন ফিল্ম বিভাগে থাকছে ১০টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র। স্পিরিচুয়াল ফিল্মস বিভাগে প্রদর্শিত হবে ১৭ ছবি। উইমেনস ফিল্ম মেকারস সেশনে ২৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগেই পুরস্কার রয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে থাকছে কয়েকটি বিশেষ প্রদর্শনী। বিনামূল্যে দেশি-বিদেশি সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন দর্শক।
১৭-১৮ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হবে মাস্টারক্লাস। সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ওইদিন প্রদর্শিত হবে পরিচালক ইকবাল হোসাইন চৌধুরীর চলচ্চিত্র ‘বলী’। আয়োজনের পর্দা নামবে ১৯ জানুয়ারি।
উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ‘সারা বিশ্বের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নতুন নতুন চলচ্চিত্র সিনেমাপ্রেমীদের উপহার দেওয়াই চলচ্চিত্র উৎসবের মূল লক্ষ্য। আশা করছি, এবারের আয়োজনটি সফল ও সার্থক হবে’।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন