ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ মনে করেন ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দুটি দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক দুর্দান্ত পর্যায়ে রয়েছে। রেল ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে উভয় দেশের সামপ্রতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি বাণিজ্য ব্যয় হ্রাস করতে সহায়তা করবে।
হাইকমিশনারের ভাষ্য মতে, স্থিতিশীল অর্থনীতি এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক পরিবেশের ফলে উভয় দেশই বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি নতুন সুযোগগুলোর সর্বোত্তম ব্যবহারে সক্ষম হবে। ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ বিষয়ক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে হাইকমিশন এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি মতে, ১১ই আগস্ট ২০২০ ভারতীয় হাইকমিশন, ঢাকা ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ওই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে একশ’জনের বেশি শিল্প নেতা অংশ নেন। হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে প্রবর্তিত ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের প্রতি আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, আত্মনির্ভর ভারত অভিযান পাঁচটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে রচিত- অর্থনীতি, অবকাঠামো, প্রযুক্তি-চালিত ব্যবস্থা, তরুণ জনগোষ্ঠী এবং চাহিদা। ২১ ট্রিলিয়ন টাকার একটি উদ্দীপক প্যাকেজ অবকাঠামোগত উন্নয়নের গতি বাড়িয়ে দেবে, গ্রামীণ অর্থনীতি ও কুটির শিল্পগুলোকে সহায়তা করবে, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোকে উৎসাহ দেবে, বিদেশি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং ভারতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ইত্যাদি ত্বরান্বিত করবে। আত্মনির্ভর ভারত এমন শিল্প ও খাতকে চিহ্নিত এবং প্রচার করবে যেগুলো বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক আকার ধারণ করার মত সক্ষমতা অর্জন করতে পারে এবং সম্ভাবনাময়। এটি ভারতকে অংশীদার দেশগুলোর সহযোগিতায় বৈশ্বিক মান শৃঙ্খলের অংশ হতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, এটি ভারতীয় ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির বিশাল সুযোগ উন্মুক্ত করবে।
অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশ যেসব নতুন সুযোগ পেয়েছে তা কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের ফলে ভারত ও বাংলাদেশে বিনিয়োগের বড় সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও তিনি শক্তিশালী বাণিজ্য নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে আরো বিনিয়োগ, সংহতি, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জ্ঞান বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। প্রাণ গ্রুপ, ইফাদ গ্রুপ, এসবিআই বাংলাদেশ, ইন্দোফিল এবং শর্থী এন্টারপ্রাইসের শিল্প নেতারা বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন সুযোগ এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র জুড়ে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
হাইকমিশনার তার বক্তৃতার সমাপনীতে চমৎকার উৎপাদন পরিবেশ, তরুণ জনগোষ্ঠী ও অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ ইত্যাদি ব্যবহার করে তৃতীয় দেশগুলোতে রপ্তানির পাশাপাশি সহযোগিতা এবং যৌথ উদ্যোগের সুযোগগুলো অনুসন্ধান করার জন্যে ভারতীয় ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন