এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর ক্রিপ্টোকারেন্সি চালু করেছেন হবু ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথের প্রাক্কালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে নিজের নামে ডিজিটাল এই মুদ্রা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের নামে ($ট্রাম্প) ক্রিপ্টোকারেন্সি চালু করার এক দিন পরই মেলানিয়াও একই পথে হাঁটলেন। তবে এই দুই ডিজিটাল মুদ্রার মূল্য বাড়লেও লেনদেনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
এর আগে ডোনাল্ড নিজের নামে ক্রিপ্টোকারেন্সি চালুর ঘোষণা দিলে এর বাজারমূল্য দ্রুত কয়েক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে ট্রাম্পের নামে একটি মিম কয়েন প্রকাশ করা হয়।
সিআইসি ডিজিটাল এলএলসি নামে প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে কয়েকটি বাজারে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি এর আগেও ট্রাম্প ব্র্যান্ডের জুতা ও সুগন্ধি বিক্রি করেছে। মিম কয়েন সাধারণত কোনো ভাইরাল ইন্টারনেট ট্রেন্ড বা কোনো আন্দোলনকে জনপ্রিয় করতে ব্যবহৃত হয়। তবে এগুলোর নিজস্ব কোনো মূল্য নেই এবং সেগুলো অত্যন্ত অনিশ্চিত বিনিয়োগ।
শুক্রবার রাতে চালুর পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই $Trump-এর বাজারমূল্য প্রায় ৫০৫ কোটি ডলারে পৌঁছায়। কয়েন মার্কেট ক্যাপ ডটকম এ তথ্য জানিয়েছে। সিআইসি ডিজিটাল এলএলসি এবং এই মাসের শুরুতে ডেলওয়্যারে প্রতিষ্ঠিত ফাইট ফাইট ফাইট এলএলসি মিলে এই টোকেনগুলোর ৮০ শতাংশ মালিকানা ধরে রেখেছে। ট্রাম্প এই উদ্যোগ থেকে ঠিক কত টাকা আয় করবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
টোকেনটির ওয়েবসাইট জানায়, প্রায় ২০০ মিলিয়ন টোকেন ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে এবং পরবর্তী তিন বছরে আরও ৮০০ মিলিয়ন টোকেন বাজারে আনা হবে। ট্রাম্পের নামে থাকা ক্রিপ্টোকারেন্সির মোট বাজারমূল্য ৮৭০ কোটি ডলার এবং মেলানিয়ার নামে চালু করা ক্রিপ্টোকারেন্সির মোট বাজারমূল্য প্রায় ১৩০ কোটি ডলার বলে জানা গেছে।
ওয়েবসাইটে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই কয়েন কোনো বিনিয়োগের সুযোগ বা নিরাপত্তার বিষয় নয় এবং এটি কোনো রাজনৈতিক প্রচারণা, রাজনৈতিক পদ বা সরকারি সংস্থার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প এই উদ্যোগের মাধ্যমে তার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন।
ক্রিপ্টো ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট নিক টোমাইনো এক পোস্টে বলেন, ট্রাম্পের ৮০ শতাংশ মালিকানা এবং শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে এটি চালু করা প্রতারণামূলক এবং এতে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ট্রাম্প এর আগে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ‘কেলেঙ্কারি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সির বিপক্ষে থাকলেও ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের মনোভাব পুরোপুরি বদলে যায়। সে সময় তিনি ইতিহাসের প্রথম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ডিজিটাল সম্পদে নির্বাচনী অনুদান গ্রহণ করেন।
এরকম ডিজিটাল টোকেন প্রায়ই বাজারে আলোড়ন তুলে দাম বাড়িয়ে দেয়। এরপর মূল শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়। এতে দেরিতে কেনা লোকেরা প্রায়ই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন। ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন শিল্পটিকে চাঙ্গা করবে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিয়ন্ত্রকরা জালিয়াতি এবং মানি লন্ডারিং নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্রিপ্টো কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। তবে ট্রাম্প এর আগে ক্রিপ্টো নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। গত বছর ন্যাশভিলের এক বিটকয়েন সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ওয়াশিংটনে ফেরার পর আমেরিকা হবে ‘পৃথিবীর ক্রিপ্টো রাজধানী’। এর আগে গত বছর ট্রাম্পের ছেলে এরিক এবং ডোনাল্ড জুনিয়র নিজেদের ক্রিপ্টো উদ্যোগের ঘোষণা দেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন