জিবি নিউজ প্রতিনিধি//
হঠাৎ মৌলভীবাজার জেলায় একের এক খুনের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত ৯ দিনে (১০-১৯ জানুয়ারি) জেলার কুলাউড়া, বড়লেখা ও কমলগঞ্জ উপজেলায় ৫টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এসব হত্যাকাণ্ড নিয়ে সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা-বাগানের ফাঁড়ি কুরঞ্জি এলাকার একটি পাহাড়ের ছড়া থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে দিপেন মুণ্ডা (৩৫) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। তিনি কুরমা চা-বাগানের কুরঞ্জি এলাকার প্রসাদ মুণ্ডার ছেলে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ বলছে, তাকে কেউ হত্যা করে ফেলে গেছে।
অপরদিকে, একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় ওই উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা-বাগানের বাজার লাইনে এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে দেবরের হাতে ভাবি খুন হন। অভিযান চালিয়ে ৯ ঘণ্টা পর ঘাতক দেবর মঞ্জুর মিয়াকে (৪২) আটক করে পুলিশ। খুন হওয়া কারিমা বেগম (৪২) পাত্রখোলা চা-বাগানের পূর্বপাড়া দুই নম্বর এলাকার মর্তুজ মিয়ার স্ত্রী।
এ ছাড়াও এর আগে রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলেপুর গ্রামে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন স্বামী আজাদ বক্স (৬০)।
এদিকে, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামে নাজমা বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। তিনি পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের ফখরু মিয়ার স্ত্রী। পাওনা টাকা নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সর্বশেষ গতকাল শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বড়লেখা উপজেলার বাড্ডা বাজারে ছুরিকাঘাতে নোমান আহমদ (৩৫) নামে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। নিহত নোমান উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের রাঙ্গিনগর গ্রামের লেচু মিয়ার ছেলে। তিনি সুজানগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
জানতে চাইলে মানবাধিকার কর্মী সাইদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, ‘খুনখারাবির খবরে মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এসবের পেছনে মূলত ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের অভাব এবং সুশিক্ষা না থাকা দায়ী। পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক সংকটও দায়ী।’
এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. শামসুল হক বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এসব খুনের ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্য সময়ের চেয়ে এখন অনেক ভালো। এ পর্যন্ত যেসব খুন হয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খুনখারাবি রোধ করতে পুলিশের বিট অফিসাররা প্রতিটি এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে। যেমন পারিবারিক দ্বন্দ্বে খুন, হত্যা, আত্মহত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা ইত্যাদি।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন