ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় ন্যায়বিচার চেয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। মামলাটিকে ‘মিথ্যা’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আমি আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল। সেই বিশ্বাসটি একদম শেষ অবধি রাখতে চাই। বিশ্বাস করি ন্যায়বিচার পাব।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পরীমনি।
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি পরীমনি আজ সকাল ১০টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানি শেষে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পরীমনি। এ সময় ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা করে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘শুরু থেকেই আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল ছিলাম, এখনও আছি। আইনের ওপর বিশ্বাস ছিল। আর একদম শুরু থেকেই আপনারা সবাই যেভাবে আমাকে সাপোর্ট করেছেন, যতটা পেরেশানিতে ছিলেন—তা দেখে আমার নিজের যত দুঃখ ছিল, সেটা ঘুচে গেছে। সবাইকে ধন্যবাদ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার আসলে এই মুহূর্তে কিছুই বলার নেই। কালকে (রোববার) থেকে আপনারা যেভাবে ভালোবাসা জানান দিয়েছেন আমাকে, এই ভালোবাসার প্রতি আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। আমি ধন্য।’
শেষে পরীমনি বলেন, ‘আমি আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল। সেই বিশ্বাসটি একদম শেষ অবধি রাখতে চাই। আমি বিশ্বাস করি ন্যায়বিচার পাব। আপনারা আমার পাশে থাকবেন। এই ভালোবাসা নিয়েই আমি জিততে চাই। আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে আজ যেমন বাড়ি ফিরছি, এ রকম একটা জয় নিয়েও যেন বাড়ি ফিরতে পারি। আমার জন্য দোয়া করবেন।’
একই মামলায় রোববার পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন করেন আদালত। তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তিনিও জামিন পেয়েছেন।
মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের এপ্রিলে পরীমনি ও জুনায়েদের বিরুদ্ধে সিজেএম আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআইয়ের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন গত বছরের ১৮ এপ্রিল আমলে নেন ঢাকার সিজেএম আদালত।
মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ৮ জুন পরীমনি ও তার সহযোগীরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে ক্লাব ত্যাগ করার সময় পরীমনি তাকে ডাক দেন। পরে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি হত্যাচেষ্টার জন্য একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন, যা তার মাথায় ও বুকে লাগে।
২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে পরীমনি ব্যবসায়ী নাসিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
অন্যদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। মামলাটিও সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন