রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে গত ২৮ জানুয়ারি একটি রেস্তোরাঁ উদ্বোধনে যাওয়ার কথা ছিল অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসের। খবর ছড়ায় ‘তৌহিদী জনতার আপত্তিতে’ তাকে রেস্তোরাঁ উদ্বোধন করতে দেওয়া হয়নি। অপু বিশ্বাস, রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে রকম খবর ছড়িয়েছে, ঘটনাটি পুরোপুরি সত্য নয়।
অপু বিশ্বাস জানিয়েছিলেন, ওই রেস্তোরাঁ উদ্বোধনে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার সে রকম কোনো বাধা ছিল না। তিনি বলেছিলেন, ‘তাদের ইলেকট্রিসিটি সমস্যা ছিল। আমি এর আগেও একটা ওপেনিংয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি।’
আজ (২ ফেব্রুয়ারি) রোববার ওই রেস্তোরাঁ মালিক জানান, স্থানীয় তৌহিদী জনতার এক প্রকার আপত্তি থাকলেও থানা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সেটি সমাধান করা হয়েছিল। অপু বিশ্বাস নিজেই সময়মতো সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি। বরং তিনি অন্য একটি প্রতিষ্ঠান উদ্বোধনে গিয়েছিলেন।
কামরাঙ্গীরচরে ‘সোনার থালা’ রেস্তোরাঁর সত্ত্বাধিকারীর ভাই প্রিন্স রানা জানান, অপু বিশ্বাস অনুষ্ঠানে হাজির না হলেও সম্মানী বাবদ অগ্রিম নেওয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেননি। বরং আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করছেন। ওই টাকা ফেরত চেয়ে শিল্পীসমিতিতে একটি হাতে লেখা অভিযোগপত্র দিয়েছেন প্রিন্স রানা।
রানা বলেন, ‘বিকেল ৩টায় অপু দিদির সশরীরে উপস্থিত হয়ে রেস্তোরাঁ উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগের দিন থেকেই তাকে আমরা ফোনে পাচ্ছিলাম না। শেষ পর্যন্ত তাকে ছাড়াই আমরা রেস্তোরাঁ উদ্বোধন করেছি। ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর অপু বিশ্বাস ফোন করে জানতে চান কোথায় আসবেন। আমরা তাকে জানাই, অনুষ্ঠান শেষ। আপনি ৫০ হাজার টাকা ফেরত পাঠান। তিনি উল্টো বাকি ৫০ হাজার টাকা দাবি করছেন। এমনকি কামরাঙ্গীরচরে ‘সোনার থালা’ উদ্বোধন করতে আসবেন এমন একটি ভিডিওবার্তা চাইলেও তিনি সহযোগিতা করেননি। তিনি না আসায় আমাদের ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে টাকা ফেরত পেতে আমরা শিল্পীসমিতির সহযোগিতা চেয়েছি।’
কামরাঙ্গীরচরে ‘তৌহিদী জনতার আপত্তি’র ঘটনাটি কী? জানতে চাইলে প্রিন্স রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিল্পী হয়ে আমি কেন অন্য শিল্পীকে বিপদে ফেলব? একটা সমস্যা হবে বলে মনে হচ্ছিল। সেটা ওসির মাধ্যমে সমাধান করেছিলাম। কিছু গণমাধ্যম কথা না বলে নিউজ করেছে। অপুদির সঙ্গে কথা বললে জানতে পারবেন, তিনি কেন আসতে পারেননি। আমরা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত থানা থেকে পারমিশন নিয়েছিলাম। কিন্তু তার কোনো খবর নাই। ফোন ধরেন না। আমরা বাধ্য হয়ে থানার ওসি সাহেবকে নিয়ে উদ্বোধন করেছি।’
তার কাছে টাকা দাবি করছেন কেন? জানতে চাইলে রানা বলেন, ‘অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সাড়ে ৪টায় অপুদি ফোন করে বলছেন, “আমি কেরানীগঞ্জে একটা বিউটি পার্লার ওপেনিং শেষ করেছি। আপনি বলেন কেরানীগঞ্জ থেকে কামরাঙ্গীরচরে পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে।” আমরা তাকে আসতে বরণ করেছি। বলেছি, আপনি সময়মতো আসেননি, চুক্তি ভঙ্গ করেছেন। এ কারণে অগ্রিম টাকা ফেরত চেয়েছি।’
অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ডি এ তায়েব। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে অপু বিশ্বাসের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন