তাকে কখনোই মাস কিংবা বছরব্যাপী কাজে দেখা যায়নি। হুটহাট হাজির হতেন বিজ্ঞাপন কিংবা ফিকশনে। কয়েক বছর ধরে সেই সংখ্যাও এসেছে কমে। ‘আয়নাবাজি’র পর গেল বছরের ঈদে ‘তুফান’ দিয়ে ৮ বছর পর বড় পর্দায় ফিরেন।
বলছিলাম, মাসুমা রহমান নাবিলার কথা। কাজ ও সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।
শুরুতেই জানতে চাই, সাম্প্রতিক ব্যস্ততা কী নিয়ে?
এখন নন-ফিকশনাল কাজ নিয়েই ব্যস্ততা যাচ্ছে। বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি বিভিন্ন শো করছি।
অভিনয় প্রসঙ্গে বলব, কথা হচ্ছে কিন্তু এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
৮ বছর পর ‘তুফান’ দিয়ে বড় পর্দায় ফিরেন। এরপর কতগুলো সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছেন?
আমার কাছে সেভাবে কোনো কাজ আসেনি। একটি সিনেমা নিয়ে কথা হচ্ছে।
কিন্তু এখনো চূড়ান্ত পর্যায়ে কিছু হয়নি। দেখা গেল পরিচালক আরো অনেকের সঙ্গেই কথা বলছেন, এরপর সেখান থেকে কাউকে হয়তো চূড়ান্ত করবেন। শেষ মুহূর্তে গিয়েও অনেক সময় অনেক কিছু বদলে যায়। সেই কারণেই বলছি, চূড়ান্ত না হলে কিছুই বলতে পারছি না।
এত বছর পর বড় পর্দায় আপনার দারুণ প্রত্যাবর্তনের পরও এমনটা কেন?
এটা কেন, আমি সত্যি জানি না।
তবে আমার ধারণা, পরিচালকরা হয়তো নিজেদের পরিচিত মানুষকে কিংবা তাদের সার্কেলের মানুষকেই কাজে বেশি রিপিট করতে পছন্দ করেন। এটা তাদের কমফোর্টের কারণেও হতে পারে, আবার বন্ডিংয়ের কারণেও। অভিনয়ে এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করেছি, সেগুলোতে তারা ঠিক তখনই আমাকে নিয়েছে যখন তাদের মনে হয়েছে যে তাদের ফ্রেশ, অর্থাৎ নতুন কাউকে দরকার। আমি কখনোই তাদের কাছে ‘ওয়ান অ্যান্ড ওনলি’ অপশন ছিলাম না।
সবাই কেমন যেন একটু সেফ থাকে বা থাকতে চায়। আমার সঙ্গে সবার দেখা-সাক্ষাতও হয় কম, সে জন্যও হয়তো বা আমার কথা তাদের মাথাতেও আসে না। অথবা আমি ভালো অভিনয় পারি না, এটাও হতে পারে।
তার মানে পরিচালকদের কাছে আপনি সব সময়ই অপশনাল...
এখন পর্যন্ত আমি তা-ই দেখছি। আমি হয়তো এখন পর্যন্ত ওই জায়গাতে যেতে পারিনি, যেখানে গেলে কেউ আমাকে নিয়ে ভাববে অথবা আমাকে মাথায় রেখে কোনো প্রজেক্ট তৈরি করবে। প্রত্যেকটা কাজের ক্ষেত্রেই আমাকে ওই সবের মধ্য দিয়ে আসতে হয়েছে যেখানে আমি ছাড়াও অপশন হিসেবে আরো পাঁচ-ছয়জনকে চিন্তা করা হয়। এটা আমি জানি এবং সেটা আমাকে বলাও হয়। তার প্রায় এক দেড় মাস পর গিয়ে জানতে পারি যে আমি চূড়ান্ত হচ্ছি কি হচ্ছি না। আমাকে সব সময় অপশনাল হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
শিল্পী-নির্মাতাদের গ্রুপিং কিংবা সিন্ডিকেট—বিষয়টা কি এ রকম কিছু?
হ্যাঁ। গত দুই-তিন বছরে এটা একটু বেশি বেড়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির পরে।
প্রতিবাদ জানাচ্ছেন?
কিভাবে প্রতিবাদ করব? দেখেন, সবাই তো সবার সুবিধাটাই দেখছে। প্রযোজক চাইবে তার প্রজেক্টে জনপ্রিয় কাউকে নিতে, কার পেছনে লগ্নি করলে ভালো হবে সেটা। তাদের দিক থেকে তারা সঠিক। তবে আমার কাছে মনে হয়, এখানে পরিচালকের ভূমিকাটা একটু বেশি হওয়া উচিত। কারণ রিপিটেড কাস্টিংয়ের কারণে দর্শকও বোরিং হয়ে যায়, আবার যাকে আপনি বারবার ব্যবহার করছেন তার চেহারাটাও বোরিং হয়ে যায়। একজন দর্শক হিসেবে একই মুখ বারবার দেখতে আমি নিজেও বোরিং হয়ে যাই। আবার যখন হুট করে কাউকে দেখি তখন আবার বলি, ওয়াও! ও এত ভালো অভিনয় করে।
আমি যখন ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমা দেখি তখন তমা মির্জাকে দেখে আমার বেশ ভালো লেগেছে। এত সুন্দর অভিনয় করেছে। অথচ ও কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক বছর ধরে কাজ করছে। ওটিটিতেও কাজ করেছে। কিন্তু আমার দেখা হয়নি। হুট করে দেখেছি এবং ভালোও লেগেছে।
এ জন্য নির্মাতাদের প্রতি আপনার কোনো বার্তা রয়েছে?
যদি পাশের দেশে তাকাই দেখি যে যাদের নিয়ে আমরা চিন্তাই করি না তাদের নিয়ে সেখানে কত সুন্দর সুন্দর কাজ হচ্ছে। ঐশ্বরিয়া রাইয়ের একটা সিনেমা ছিল, নাম ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’। এই সিনেমাটা যখন করে তার আগে সে হয়তো একটা-দুইটা সিনেমা করেছিল। সে এত সুন্দরী ছিল, সে সময় পরিচালক সঞ্জয়লীলা বানসালি তাকে নিয়ে কাজ করে এবং তার থেকে অভিনয়টা বের করে নিয়ে এসেছিল।
আমার কাছে মনে হয়, সবাইকে সমানভাবে সুযোগ দেওয়া উচিত এবং সবাইকে নিয়ে ভাবা উচিত। যে অভিনয় জানে সে তো জানেই, এর বাইরে অন্য একজনকে নিয়েও চেষ্টা করা, তার পটেনশিয়ালিটিটা বের করে আনা উচিত।
‘বনলতা সেন’ হয়ে নাবিলা কবে পর্দায় আসছেন?
আমি আসলে জানি না। পরিচালকের সঙ্গে অনেক দিন কথা হয় না। উনিও কিছুই জানাননি। শুনেছিলাম উনি রোজার ঈদে সিনেমাটি মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর পর তো আর কোনো খবরই পাইনি।
সর্বশেষ প্রশ্ন, আসন্ন ভালোবাসা দিবসে দর্শকদের জন্য কিছু থাকছে কি?
ভালোবাসা দিবসের জন্য কিছুই করা হয়নি। সামনে রমজান মাস, তারপর ঈদ সেগুলো ঘিরে রান্না কিংবা ইফতারের শো করা হবে। পাশাপাশি বিজ্ঞাপন করা হবে। এর বাইরে আপাতত কিছু করছি না।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন