হাসিনার বিদেশ ভ্রমণ-ডিগ্রির পেছনে ‘অর্থ অপচয়’ অনুসন্ধানে দুদক

রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা খরচ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফর এবং বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়ার পেছনে ‘অর্থ অপচয়’ হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন। দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর প্রকাশ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফরে গেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ভাড়া করতেন সরকারি টাকায়। নিয়ে যেতেন সফরসঙ্গীদের বিশাল বহর। টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে প্রায় প্রতি জাতিসংঘের অধিবেশনে সরকারপ্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি।

প্রতিবারই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিশাল বহর নিয়ে নিউইয়র্ক যেতেন জানিয়ে দুদকের অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে ২২৭জনের একটি দল নিয়ে নিউইয়র্কে ৭০তম সাধারণ অধিবেশন এবং টেকসই উন্নয়ন-বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। ২০১৪ সালে ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে এ সংখ্যা ছিল ১৭৮ এবং ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৩৪ জন।

 

অভিযোগে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে বিমানের বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৮৭ সিরিজের অত্যাধুনিক উড়োজাহাজে যেতেন। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাটি ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এসব সফরে শেখ হাসিনা ব্যয় করেছেন প্রায় ২০০ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় বিকেলে হেলসিংকির ভানতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইট বিজি-১৯০২ যোগে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।

বিমানের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্রে খবর নিয়ে জানা গেছে, সরাসরি ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক যাত্রা না করে ফিনল্যান্ডে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এ ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট অবতরণ এবং সেখানে দুদিনের ল্যান্ডিং চার্জসহ সফরসঙ্গীদের যাবতীয় খরচ বহন করতে অতিরিক্ত সাত কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়েছে। উল্লেখ্য ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিমানের প্রায় ৫০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে সরকারের কাছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট সংগ্রহ করেছেন। দেশের সরকারি টাকা লবিস্টের পেছনে ব্যয় করে মানদণ্ড ভঙ্গ করে সংগ্রহ করা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভুয়া ডক্টরেট হলো- ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, বেলজিয়ামের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় অব ব্রাসেলস, ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। জানা যায়, তিনি যেসব পদক ও ডিগ্রি সংগ্রহ করেছেন তার প্রায় সবগুলোর পেছনে প্রচুর খরচ বা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি চুক্তির বিনিময়ে বাগিয়ে নিয়েছেন।

 

এর আগে পূর্বাচল নিউটাউনের প্লট বরাদ্দে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ত শেখ হাসিনা ছাড়াও তার ছোট বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের নামে একাধিক মামলা করেছে দুদক।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন