গুয়াতেমালায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিং ভেঙে গভীর খাদে পড়ে গেলে অন্তত ৫৫ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দেশটির কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর একটি।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বাসটি প্রায় ৭০ জন যাত্রী নিয়ে গুয়াতেমালা সিটিতে প্রবেশের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এটি স্যুয়ারেজ-দূষিত একটি নদীতে পড়েছিল, যা উদ্ধারকাজকে আরও কঠিন করে তোলে।
গুয়াতেমালার সরকারি কৌঁসুলির দপ্তরের মুখপাত্র মইসেস ওর্তিজ জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলেই ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। সান হুয়ান দে দিওস হাসপাতালের মুখপাত্র মার্লিন পেরেজ জানান, হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজন মারা যান। আহতদের মধ্যেও অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনাস্থলে একটি অস্থায়ী মর্গ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে স্বজনদের খোঁজে আতঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা ভিড় করছেন।
৪৮ বছর বয়সী রোসা লোপেজ জানান, তার চারজন ভাতিজা-ভাতিজি ওই বাসে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার খবর শুনেই আমরা ছুটে এসেছি।
এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট বের্নার্দো আরেভালো। দেশজুড়ে তিনদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি।
দমকল বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বাসচালক নিয়ন্ত্রণ হারালে কয়েকটি ছোট যানবাহনের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর বাসটি রেলিং ভেঙে প্রায় ২০ মিটার (৬৫ ফুট) গভীর খাদে পড়ে যায়।
দমকল বিভাগের কর্মকর্তা কার্লোস হার্নান্দেজ বলেন, বাসটি থামেনি, এটি রেলিং ভেঙে নদীতে পড়ে যায়।
উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া এক দমকলকর্মী লুইস কুইন্তানিলা বলেন, আমরা তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পানির নিচে থেকে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছি। একটি মরদেহ এখনো বাসের ধাতব অংশের মধ্যে আটকে রয়েছে।
গুয়াতেমালার যোগাযোগমন্ত্রী মিগেল অ্যাঞ্জেল দিয়াজ জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বাসটির বয়স ৩০ বছর হলেও এটি চালানোর অনুমোদন পেয়েছিল।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বাসে যাত্রীসংখ্যা অনুমোদিত সীমার বেশি ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর এ দুর্ঘটনার কারণ জানতে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন