ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাশিয়া হতে চায় : ক্রেমলিন

gbn

ক্রেমলিন মঙ্গলবার জানিয়েছে, ইউক্রেনের একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ অংশ’ রাশিয়ার অংশ হতে চায়। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ইউক্রেন ‘একদিন রাশিয়া হয়ে যেতে পারে’।

ফক্স নিউজে সোমবার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে বলেন, ‘(ইউক্রেন) হয়তো কোনো সমঝোতায় পৌঁছবে, হয়তো পৌঁছবে না। তারা একদিন রাশিয়া হতে পারে, কিংবা না-ও হতে পারে।

 

এ প্রসঙ্গে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার বলেন, ইউক্রেন পরিস্থিতি ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়’।

২০২২ সালে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রাশিয়া দখলে নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এটি একটি বাস্তবতা, ইউক্রেনের একটি বড় অংশ রাশিয়ার হতে চায় এবং ইতিমধ্যে হয়ে গেছে’। রাশিয়া দাবি করছে, তারা ইউক্রেনের পাঁচটি অঞ্চল—২০১৪ সালে ক্রিমিয়া এবং ২০২২ সালে দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝঝিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে এসব অঞ্চল রাশিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই।

 

পেসকভ আরো বলেন, ‘যেকোনো কিছু ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা নিয়ে ঘটতে পারে—হয় হবে, নয় হবে না।’  

ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা তার প্রেসিডেন্সির প্রথম কয়েক মাসের অন্যতম অগ্রাধিকার। তবে কিভাবে তিনি দুই পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনবেন, সে বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি। তবে মস্কো ও কিয়েভ—উভয়ই যুদ্ধ বন্ধের প্রতি তার গুরুত্ব আরোপকে স্বাগত জানিয়েছে।

 

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে প্রস্তুত। অন্যদিকে নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ইতিমধ্যে পুতিনের সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন। অবশ্য ক্রেমলিন এ ফোনালাপের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।


 

পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এর আগে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন। আপাতত এমন কোনো ভিত্তি নেই, যেখানে দুই পক্ষ কোনো চুক্তিতে পৌঁছতে পারে।

 

এদিকে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে শুক্রবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সাক্ষাৎ করবেন বলে তার মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প এই মাসের শেষের দিকে তার বিশেষ দূত কিথ কেলোগকে ইউক্রেনে পাঠাবেন, যাতে যুদ্ধ শেষ করার একটি সম্ভাব্য রোডম্যাপ নিয়ে আরো আলোচনা করা যায়।  

জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা
দুই পক্ষই যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশলগত সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করছে, সম্ভাব্য আলোচনার আগে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে, তাদের বাহিনী ইউক্রেনের পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের ছোট গ্রাম ইয়াসেনোভ দখল করেছে। এর মধ্যেই দুই পক্ষ একে অপরের জ্বালানি অবকাঠামোতে দূরপাল্লার হামলা চালিয়েছে।  

ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, তাদের বাহিনী রাশিয়ার সারাতভ অঞ্চলের একটি তেল শোধনাগারে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনে জড়িত কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চলবে।’ এর আগে ওই অঞ্চলের রুশ গভর্নর একটি শিল্প স্থাপনায় ড্রোন হামলার কথা জানান, তবে নির্দিষ্ট স্থানের কথা উল্লেখ করেননি। 

এ ছাড়া রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ইউক্রেনের গ্যাস ও জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে, যা কিয়েভের সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করে। পাশাপাশি ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় গ্যাস কম্পানি নাফতোহাজ নিশ্চিত করেছে, পূর্ব পোলতাভা অঞ্চলে তাদের একটি স্থাপনা গত রাতে ব্যাপক রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার পর মঙ্গলবার সকালে ইউক্রেনজুড়ে সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়, যা দেশটিতে প্রায়ই ঘটে থাকে।  

রাশিয়া কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বোমাবর্ষণ করছে। তাদের দাবি, এসব স্থাপনা কিয়েভের সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করে। ইউক্রেনও রাশিয়ার জ্বালানি ও সামরিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। মস্কো অভিযোগ করেছে, এসব হামলায় ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সরবরাহকৃত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে, যা রাশিয়ার অভ্যন্তরে গভীরে আঘাত হানছে।

 

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন