রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা গড়ে তুলতে একটি ‘ইউরোপীয় বাহিনী’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ইউরোপের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী না-ও হতে পারে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন এমন কোনো সমঝোতা মেনে নেবে না, যা তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া গোপনে করা হবে।
জেলেনস্কি বলেন, আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, ইউরোপীয় সশস্ত্র বাহিনী গঠনের সময় এসেছে। তিনি আরও বলেন, গতকাল এখানে মিউনিখে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে বলেছেন, ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যে পুরোনো সম্পর্কের যুগ শেষ। এখন থেকে পরিস্থিতি বদলাবে এবং ইউরোপকে সেই অনুযায়ী প্রস্তুত হতে হবে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন ন্যাটোর জন্য একটি ‘ফ্যাক্টরি রিসেট’ (সবকিছু নতুন করে শুরু করা) মুহূর্ত, যা জোটকে আরও শক্তিশালী ও বাস্তবসম্মত হতে বাধ্য করবে।
শনিবার জেলেনস্কি বলেন, আসুন স্বীকার করি, এখন আর একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না যে আমেরিকা এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে যা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে।
তিনি আরও বলেন, অনেক নেতাই ইউরোপের নিজস্ব সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। আজ সেই সময় এসেছে।
ইউরোপীয় বাহিনী গঠনের ধারণাটি আগেও বেশ কয়েকজন নেতা তুলে ধরেছিলেন, যার মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অন্যতম। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে ইউরোপের নিজস্ব সামরিক শক্তি গড়ে তোলার পক্ষে ছিলেন।
জেলেনস্কি জানান, কয়েক দিন আগে ট্রাম্প আমাকে বলেছিলেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু একবারও উল্লেখ করেননি যে, আমেরিকার জন্য ইউরোপের উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। এটা অনেক কিছুই বুঝিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, সেই পুরোনো সময় শেষ, যখন যুক্তরাষ্ট্র কেবল অভ্যাসবশত ইউরোপকে সমর্থন দিতো।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রায় তিন বছর হতে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প ও হেগসেথ দুজনেই বলেছেন, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ নিশ্চিত হওয়া কঠিন হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনের ২০১৪ সালের আগের সীমান্ত পুনরুদ্ধারও বাস্তবসম্মত নয়। তবে জেলেনস্কি স্পষ্ট করেছেন, তিনি কখনোই ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের বিষয়টি আলোচনার টেবিল থেকে বাদ দেবেন না।
এদিকে, ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে গত সপ্তাহে একটি ফোনালাপ হয়, যেখানে তারা ইউক্রেন ইস্যুতে শান্তি আলোচনার বিষয়ে কথা বলেন। তবে এতে ইউরোপীয় নেতারা একপ্রকার উপেক্ষিত হন।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের পাশাপাশি ইউরোপেরও সেই আলোচনার টেবিলে থাকা প্রয়োজন, যেখানে ইউরোপের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন