বিজয়ের মাস শুরু

gbn

  জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

আজ ১ ডিসেম্বর। শুরু হলো বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের এই মাসেই অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা। বিশ্বের মানচিত্রে সার্বভৌম-স্বাধীন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করে অর্জিত এ বিজয় ছিল আনন্দ, উল্লাস ও গৌরবের। একই সঙ্গে ছিল প্রিয়জন হারানো শোকের।

সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে এবং বিজয়ের সেই আনন্দকে বুকে ধারণ করে বিগত ৪৯ বছরে একটু একটু করে বদলে গেছে আমাদের স্বপ্ন স্বদেশভূমি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন আমরা পৌঁছে গেছি উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তরুণ প্রজন্ম নতুন উদ্দীপনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশপ্রেম, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে।

 

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাঙালি বীর সন্তানদের সঙ্গে যুদ্ধে একের পর এক পরাজিত হতে থাকে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী। ক্রমাগত পরাজয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে।

১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গেরিলা হামলা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশে সেনাবাহিনী আরও ভয়াবহভাবে নিরীহ জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর অপর পারে জিঞ্জিরাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে এক দিনেই হত্যা করা হয় ৮৭ জনকে।

এ সময় বাঙালির স্বাধীনতার লড়াইকে আড়ালে রাখতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে বেতারে ঘোষণা দেন। তবে সেদিন কোনো ষড়যন্ত্রই বাঙালিকে বিজয় অর্জন থেকে পিছিয়ে রাখতে পারেনি। মাতৃভূমিকে হানাদারমুক্ত করতে তারা মরণপণ লড়াই চালিয়ে যান।

একদিকে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণপণ যুদ্ধ, অন্যদিকে মিত্রবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে জীবন বাঁচাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বীর বাঙালির কাছে আত্মসমর্পণের পথ খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে বাংলাদেশ দ্রুত মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যায়। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পথ বেয়ে আসে পরম কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।

১৯৭১ সালের আজকের দিনে মুক্তিবাহিনী সিলেটের শমশেরনগরে আক্রমণ চালিয়ে টেংরাটিলা ও দোয়ারাবাজার শত্রুমুক্ত করে। মুক্তিবাহিনীর অপারেশনের মুখে পাকিস্তানিরা সিলেটের গ্যরা, আলীরগাঁও ও পিরিজপুর থেকেও ব্যারাক গুটিয়ে নেয়। এ সময় রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের এক মুখপাত্র ‘শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার শেষ হয়নি’ বলে বিবৃতি দেন।

একই দিনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার পার্লামেন্ট বক্তৃতায় উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য সরানোর জন্য ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহ্বান জানান। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা গোলাম আযম এ সময় ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠক করে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগের দাবি তোলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দি ত এই নেতা তখন মুক্তিযুদ্ধকে ‘কমিউনিস্টদের অপতৎপরতা’ হিসেবে অভিহিত করে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও বিজয়ের মাসে দেশবাসী বিজয় ও মুক্তির আনন্দে উল্লসিত হবে। ভালোবাসায় উজ্জীবিত ও শোকে মুহ্যমান হয়ে শ্রদ্ধা জানাবে অগণিত মুক্তিযোদ্ধাকে। নানা আয়োজনে সবার চেতনায় অনুরণিত হবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাবনত ভালোবাসা।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন