জালালুর রহমান, জুড়ী (মৌলভীবাজার)// আল-কুরআনের শাসন ব্যবস্থা ছাড়া পৃথিবীতে কোন দিন শান্তি আসবে না। যারা কুরআনের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা অবশ্যই দুনিয়া-আখেরাতে অপমানিত হবে। এ পযন্ত যারা এ দেশ শাসন করেছে তারা কেউই মানুষকে শান্তি দিতে পারেনি। এর পরিবর্তে ক্ষমতা আজীবন তাদের পক্ষে রাখার জন্য অন্যায়ভাবে মানুষকে খুন-গুম হত্যা ও জুলুম করেছে। তাদের পকেটও ভারী করেছে। নতুন করে আয়না ঘর বানিয়ে জুলুমের মাধ্যমে বিশ্ব রেকর্ড করেছে। তারা মানুষকে লগী-বৈঠা দিয়ে নির্বিচারে প্রকাশ্যে হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করে ধোকা দিয়ে নির্বাচনবিহীন ক্ষমতায় এসে (৫ মে) ঢাকার শাপলা চত্বরে এ দেশের ইসলাম প্রিয় আলেম-ওলামাকে পরিকল্পিতভাবে রাতে লাইট বন্ধ করে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। তাফসির মাহফিল করাতো দূরের কথা, যারা তাদের বিপক্ষে কথা বলেছে তাদেরকে তাদের পেটুয়া বাহিনা দিয়ে গ্রেফতার করে জেলে বন্দি করে জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। কত মানুষ আয়না ঘরে মরেছে তার হিসেব নেই। কুরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীকে মিথ্যা মামলায় আটক করে ১৩ বছর কারাগারে বন্দি করে রেখেছিল এ জালিম সরকার। তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখানো হচ্ছিল। এমনকি এ জালিম সরকারের ধর্ম মন্ত্রী বানানোর কথাও শোনানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখান করেছিলেন। এ জন্য তারা প্রথমে তাকে মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করেছিল। এ রায় শুনে দেশের ইসলাম প্রিয় জনতা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছিল, এমনকি অনেকে শহিদও হয়েছে। এরপর এ রায় টিকাতে না পেরে আবারো আমৃত্যু কারদন্ডে চলে আসে। এ রায় যে ঘোষনা করেছিল সে কালো মানিক আজ কলা পাতায়। আল্লাহপাক ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। বিশ্বের সব চেয়ে বড় জালিম, নমরুদ, অনেক ক্ষমতাবান ছিল। কিন্তু তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করেছে এক ছোট্ট লেংড়া মশা। তা থেকে আমাদের সকলকে শিক্ষা নিতে হবে। ২০২৩ সালের ১৩ আগষ্ট কুরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে কারাগার থেকে হাসপাতালে আনা হল অথচ তখন তিনি সম্পুর্ন সুস্থ ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল আপনি কি কোন কষ্টে আছেন?তখন তিনি একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে বলেছেন, আমি সম্পুর্ন সুস্থ। আমাকে কেন এখানে আনা হলো আমার পরিবারকে তা জানানো হয়েছে কিনা? তখন তিনি আল্লাহর নিকট একমাত্র শহীদি মৃত্যুই কামনা করেছিলেন। কোন জালেমের নিকট তিনি মাথা নত করেননি কিন্তু ইসলামের দুশমনেরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার জোরপূর্বক মৃত্যুর জন্য ইনজেকশন পুশ করে তাকে হত্যা করেছে। উনার শেষ হাসিই ছিল শহীদি হাসি। এ জন্য তাদেরকে গ্রেফতার করে প্রকাশ্যে ট্রাইবুনালে বিচার করে ফাসি নিশ্চিত করতে হবে। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগষ্টের বিজয় ছিল একমাত্র ছাত্রজনতার ঐক্যের বিজয়। এ বিজয়কে নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করে শহীদদের রক্তের মর্যাদা দিতে হবে। ছাত্র জনতার এ আন্দোলনের সময় জালিম সরকারের প্রধান বলেছিলেন শেখের বেটি পালায় না তা হলে তিনি কি শেখের বেটি নয়? তার এতো শক্তি ও জনপ্রিয়তা কোথায় গেল। তিনি তার পিতার সম্মানও নষ্ট করেছেন। এ দেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা চুরি হয়ে গেল। এদেশের সচেতন জনগন তাদেকে কখনো ক্ষমা করবে না। টাকার উপর বাপের ছবি থাকলেই তা আপনার টাকা নয় এটা জনগনের টাকা। চুরি করা টাকাগুলো ফেরত দিয়ে দিন। নতুবা এ দেশের জনগন তা আদায় করে ছাড়বে (ইনশাআল্লাহ)। এত কিছুর পরও নির্লজ্জ পলাতক বলেন, চট কর তিনি দেশে চলে আসবেন। আমরাও আপনাকে জট করে ট্রাইবুনালে দিয়ে দিব। আপনার মনের খায়েশে করা আইনেই সকল খুন-গুম, হত্যা ও আয়না ঘরের জুলুমের বিচার হবে (ইনশাআল্লাহ)। পরিশেষে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েমের জন্য দেশের সচেতন মহলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কুরআনের শাসন কায়েমের জন্য ঘরে ঘরে ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌছে দিতে সকলকে উদাত্ব আহবান জানান তিনি।
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইসলামি সমাজ কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত দু'দিন ব্যাপী শনি- রবিবার (১৫ ও ১৬ জানুয়ারি) সভাপতি মাওঃ আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তাফসীরুল কুরআান মাহফিলের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন