ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের ভাগ দিতে রাজি না হলে দেশটিতে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাতে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তিনটি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের প্রাথমিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর স্টারলিংকের প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়।
গত কয়েক বছর ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সংস্থা স্টারলিংক।
একটি সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কিথ কেলগের সঙ্গে বৈঠকে জেলেনস্কিকে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়, খনিজ চুক্তিতে না এলে স্টারলিংক সেবা বন্ধ করা হতে পারে।
সূত্রের ভাষ্যমতে, ইউক্রেন স্টারলিংকের ওপর নির্ভরশীল। এটি তাদের জন্য নর্থ স্টারের মতো। স্টারলিংক হারালে ইউক্রেনের বড় ক্ষতি হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের একাংশ দাবি করেছিল, যার মূল্য প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার। এই দাবির বিপরীতে ইউক্রেন কোনো নির্দিষ্ট নিরাপত্তা গ্যারান্টি পায়নি বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
তবে শুক্রবার জেলেনস্কি জানান, দুই দেশ একটি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, খুব শিগগির চুক্তি সই হবে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলার পর ইলন মাস্কের উদ্যোগে স্টারলিংক টার্মিনাল ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছিল, যা দেশটির সামরিক যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে ২০২২ সালের শেষের দিকে কিয়েভের যুদ্ধ পরিচালনার ধরন নিয়ে সমালোচনার পর মাস্ক স্টারলিংক সেবা সীমিত করে দিয়েছিলেন।
আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো মেলিন্ডা হারিং বলেন, ইউক্রেনের সামরিক অভিযানে ড্রোন ব্যবহারে স্টারলিংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্টারলিংক হারালে যুদ্ধের গতিপথ বদলে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউক্রেনের দূতাবাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। একইভাবে, স্পেসএক্স থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে, ইউক্রেন মিত্র দেশগুলোর কাছে তার খনিজ খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়, যা তার ‘বিজয় পরিকল্পনা’র অংশ হিসেবে রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে সাহায্য করতে পারে।
ট্রাম্প এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন এবং ইউক্রেন থেকে বিরল খনিজ ও অন্যান্য সম্পদ সরবরাহ নিশ্চিত করতে চেয়েছেন। তবে সম্প্রতি জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিস্তারিত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে ওয়াশিংটন ও মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ৫০ শতাংশ মালিকানা চাওয়া হয়েছিল।
এ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচনহীন একনায়ক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে জেলেনস্কি বলেছেন, ট্রাম্প রাশিয়ার অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন