আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র লক্ষ্য দেশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা করা

gbn

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র লক্ষ্য দেশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা করা। এর জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নকে তারা অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে।

লক্ষ্য সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠানতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষণা দিয়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ভারতপন্থী, পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির ঠাঁই হবে না। আমরা বাংলাদেশকে সামনে রেখে, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ সামনে রেখে রাষ্ট্র বিনির্মাণ করব।

 

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা, শহীদ পরিবারের সদস্য ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সংগ্রামী সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সামনের কথা বলতে চাই। পেছনের ইতিহাস অতিক্রম করে সম্ভাবনার বাংলাদেশের কথা বলতে চাই।

 

লক্ষ্য সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠাজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ‘তুমি কে, আমি কে, বিকল্প, বিকল্প’ স্লোগানটি স্মরণ করিয়ে দিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিকল্পের জায়গা থেকে এই নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। আজকের মঞ্চ থেকে শপথ, বাংলাদেশকে বিভাজিত করা যাবে না।’

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ইসমাইল হোসেন রাব্বীর বোন মীম আক্তার। এরপর আংশিক আহ্বায়ক কমিটির পুরোটা ঘোষণা করেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

 

নতুন দলটির শীর্ষ ১০ জনের মধ্যে আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব পদে আখতার হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন এই দলে মুখ্য সমন্বয়ক পদে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদে আব্দুল হান্নান মাসউদ, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এরপর লিখিত বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি, জুলাই ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াই সূচনা করেছে। একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সব সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে।

সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভেঙে পড়া রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা এবং তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করা হবে আমাদের রাজনীতির অগ্রাধিকার। এর মধ্য দিয়েই শুধু আমরা একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারব।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই ২০২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আমরা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা এই মর্মে ঘোষণা করছি—আমরা হাজার বছরের ঐতিহাসিক পরিক্রমায় বঙ্গীয় বদ্বীপের জনগোষ্ঠী হিসেবে এক সমৃদ্ধ ও স্বকীয় সংস্কৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তন ঘটে। তবে শোষণ ও বৈষম্য থেকে এ দেশের গণমানুষের মুক্তি মেলেনি। ফলে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের জনগণকে বারবার গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হয়েছে। ১৯৯০ সালে ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সামরিক স্বৈরাচারকে হটিয়েছে। তথাপি স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়েও আমরা গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে পারিনি; বরং বিগত ১৫ বছর দেশে একটি নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থে বেপরোয়া ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থপাচারকে একটি রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিতে পরিণত করা হয়েছে। জুলাই ২০২৪-এ ছাত্র-জনতা বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকারের পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি। জনগণ বরং রাষ্ট্রের আষ্টেপৃষ্ঠে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিল, যাতে করে জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি। এটি হবে একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল। তাই আসুন, প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে শপথ গ্রহণ করি। ঐক্যবদ্ধ হই এবং আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে যাই। আমাদের দেশ, আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ-আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক অধরা কোনো স্বপ্ন নয়, এটি আমাদের প্রতিজ্ঞা!’

এর আগে দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে নতুন রাজনৈতিক দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আজ এক নতুনের সুযোগ পেয়েছে। এই নতুনের দায়িত্ব যারা বহন করতে ইচ্ছুক, যারা বাংলাদেশকে নতুন কিছু উপহার দিতে চায়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম—সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সুবিচারের বাংলাদেশ, সেই স্বপ্নকে যারা বাস্তবে রূপদান করতে চায়, এই বাংলাদেশে একটি স্বনির্ভর পররাষ্ট্রনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, এ দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে চায়, জনস্বার্থের পলিসি নির্মাণ করতে চায়, এমন উদ্যমী তরুণদের নেতৃত্বে নতুন যে রাজনৈতিক দল গঠিত হলো, সারা দেশের মানুষের কাছে আহ্বান, আজকে তরুণরা যে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে, আপনারা সবাই দোয়া করবেন, যেন মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের তরুণদের স্বপ্নকে বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করার তৌফিক দান করেন। বাংলাদেশে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, এই তরুণরা যেন তাদের নেতৃত্বে বাংলার জমিনে সেই খুনি, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচার করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশে ৫৪ বছর পর আমরা যে সুযোগ পেয়েছি, একটি নতুন সংবিধানের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। এই তরুণরা স্বপ্ন দেখে আগামীর বাংলাদেশ এক নতুন সংবিধানের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানাই।’

দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং যেসব নাগরিক তাদের জীবন দিয়ে দেশ রক্ষা করেছে, তাদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি। এই কমিটির অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দেশের আনাচেকানাচে ৪০০টি থানা কমিটি গঠন করতে সক্ষম হয়েছি। গণ-অভ্যুত্থানের সহযোগিতা করা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ সাধারণ জনতার আত্মত্যাগের সঠিক মূল্যায়নে সক্ষম হব বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘বাংলাদেশে গত ৫৩ বছরে আমাদের একটি বাইনারি রাজনীতিতে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দ্বিতীয় কোনো সুযোগ না থাকায় আমরা নাগরিক অধিকারের বিষয়টি ভুলতে বসেছিলাম। অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সেই দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটানোর স্বপ্ন দেখতে যাচ্ছি। এখন আমরা একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কথা বলছি। কারণ এর আগে বাংলাদেশকে কখনো একটি রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানের আত্মত্যাগ স্মরণ করে এই উদ্যোগ আমাদের নিতে হবে। এ দেশের মানুষের যে সংগ্রাম তা আমাদের মধ্যে ধারণ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘৫ আগস্টের মধ্য দিয়ে আমরা দুঃশাসনের কবর রচনা করেছি। গণভবনে কে যাবে তা নির্ধারণ হবে বাংলাদেশ থেকে। ভারত থেকে নয়। সংসদে কে যাবে তা নির্ধারণ করবে দেশের খেটে খাওয়া জনতা। ক্ষমতার মসনদে কে বসবে তা নির্ধারণ করবে এই ভূখণ্ডের মানুষ। আমরা এই তরুণ প্রজন্ম কথা দিতে চাই, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আমরা সচল করে গড়ে তুলব।’

উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এটা যদি থাকে তাহলে আগামী বাংলাদেশ হবে অপ্রতিরোধ্য।’ রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি বলেন, ‘নিজেদের সামান্য স্বার্থের জন্য কারো দলীয় এজেন্ডা পালন করবেন না, ছোট এ জীবনে যেন পদের খেয়ানত না করি।’

শেখ মুজিব রক্ষীবাহিনী গঠন করে দুঃশাসন চালিয়েছেন উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘শেখ মুজিব রক্ষীবাহিনী গঠন করে দুঃশাসন চালিয়েছেন। বিভিন্ন হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছেন। শেখ হাসিনার সময় আবারও স্বৈরশাসন, একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠাসহ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে তাদের জিম্মি করে রেখেছিল। এ দেশের সাধারণ মানুষসহ তরুণদের শেখ হাসিনার কশাঘাতে নির্যাতিত হতে দেখেছি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় দলে দলে সংঘর্ষ, এমনকি বেগম খালেদা জিয়াকেও নির্মমভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। আবারও গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনাসহ তাঁর দলীয় নেতাদের পাশের দেশেও পালিয়ে যেতে দেখেছি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে কথা দিচ্ছি, আগামীর বাংলাদেশ হবে গণতন্ত্রের বাংলাদেশ।’

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতা দখলের জন্য রাজনীতি করতে আসিনি। আমরা রাজনীতি করতে এসেছি জনগণের ক্ষমতা জনগণকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যে কেউ তার যোগ্যতা, সততা এবং জনগণের সমর্থন নিয়ে মানুষের নেতৃত্ব দিতে পারবে, নেতা হয়ে উঠতে পারবে। তার ব্যক্তি বা পরিবার মুখ্য বিষয় হবে না। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে ক্ষমতা ব্যক্তি বা পরিবারের হাতে থাকবে না। ক্ষমতা থাকবে জনগণের হাতে। বাংলাদেশ বদলাবে, শিগগিরই বদলাবে, এবার বদলাবে, আপনাদের হাত ধরেই বদলাবে।’

 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যেসব রাজনৈতিক দলের নেতারা

নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান উপলক্ষে গতকাল দুপুর থেকেই মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। এ সময় দলটির নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বিগত ৫৩ বছরে তরুণদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হয়নি। আমরা আশা করব, তাঁদের এই দলের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও সাম্যের বাংলাদেশ তৈরি করতে সক্ষম হবেন।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এমন একটা সময় তাঁরা দল গঠন করছেন যখন জাতির সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। জাতীয় জীবনে আমরা এখন ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। রাষ্ট্রব্যবস্থার পুনর্গঠন ও সংবিধান সংস্কারের মধ্য দিয়ে নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মো. দিদারুল আলম, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের, পাকিস্তান হাইকমিশনের কাউন্সেলর কামরান ধাঙ্গাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

সরেজমিন চিত্র

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে শুরু করেন ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দলে দলে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউয়ে হাজির হন। এর মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানে আহত অনেককেও সমাবেশে আসতে দেখা গেছে। এ সময় ব্যানার, মিছিলসহ অনেককে মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধেও সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে।

রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই ধানমণ্ডি ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখা গেছে। পুলিশ ও বিজিবির পর্যাপ্ত নিরাপত্তার পাশাপাশি সেনা সদস্যদের টহল দিতেও দেখা গেছে।

লক্ষ্য সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা

নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন