ইফতারে সিলেটের বিখ্যাত পাতলা খিচুড়ি

gbn

জিবি নিউজ প্রতিনিধি//

রমজানের বিকাল থেকেই সিলেটে জমজমাট হয়ে উঠতে শুরু করে বাহারি রকমের ইফতারের দোকান। ক্রেতাদের মন তুষ্ট করতে ইফতারে রাখা হয় নানা আয়োজন। আর ইফতারে এগুলো কিনতে ক্রেতাদেরও আগ্রহের কমতি নেই। তবে সবার পছন্দের তালিকায় থাকছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী পাতলা খিচুড়ি।

 

 

 

রকমারি ইফতারের আয়োজনের অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী পাতলা খিচুড়ি। চালের সঙ্গে ডাল, সবজি ও হরেক রকমের মসলার সংমিশ্রণ। তাতে রয়েছে মন মাতানো ঘ্রাণ। আর ঘ্রাণেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে সিলেটের পাতলা খিচুড়ি। সিলেটে রোজাদারদের জনপ্রিয় খাবার এটি।

 

জনপ্রিয় এই খাবারের সঙ্গে যুগ যুগ থেকেই সিলেটবাসী পরিচিত। দেশে কিংবা প্রবাসে যেখানেই সিলেটিরা থাকুক না কেন, ইফতার যেন পাতলা খিচুড়ি ছাড়া যেন জমেই না।

 

 

সুগন্ধি চিকন চালের সঙ্গে গাওয়া ঘি, কালোজিরা ও মেথিসহ নানা মসলা দিয়ে রান্না হয় স্বাদে, ঘ্রাণে অতুলনীয় খিচুড়ি। স্বাদে ভিন্নতা আনার জন্য অনেকেই এতে গরু বা মুরগির মাংস, ছোলা এবং পছন্দের শাকসবজিও মিশিয়ে থাকেন। তবে সাধারণ চাল দিয়েও খিচুড়ি রান্না করা হয়।

 

 

সিলেটের ইফতারে আগে নগরের নামি-দামি রেস্টুরেন্টগুলোর সামনে প্রতিবছরই দীর্ঘ লাইন ধরে থাকেন ক্রেতারা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সিলেট নগরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জিন্দাবাজারে জোহরের নামাজের পর থেকে একাধিক রেস্টুরেন্টেগুলোতে লাইন ধরে ইফতার সামগ্রী কিনতে দেখা যায় রোজাদারদের। যার মধ্যে পাতলা খিচুড়ি, আখনি থেকে শুরু করে চানা পেঁয়াজুসহ নানা আইটেমের ভাজাপোড়ার দিকেই বেশি আগ্রহ ক্রেতাদের।

 

সরেজমিনে, নগরের জিন্দাবাজার, নাইরপুল, আম্বরখানা, শাহি ঈদগাহ, বন্দরবাজার এবং বেশি কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায় ইফতার সামগ্রী কিনতে দীর্ঘ লাইন ধরেছেন ক্রেতারা।

 

 

সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের একটি অভিজাত ইফতারির দোকান পালকীতে ইফতার কিনতে আসা সোহেল আহমদ বলেন, ইফতারে আখনি বা খিচুড়ি যেকোনো একটা না থাকলে চলে না। তবে আখনির চেয়ে খিচুড়ি বেশি ভালো লাগে। আর সারাদিন না খেয়ে থাকার পর পাতলা খিচুড়ি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। আড়াইশ টাকা কেজি হিসেবে খিচুড়ি কিনেছেন তিনি।

 

 

ইফতার কিনতে জিন্দাবাজার রাজবাড়ি রেস্তোরাঁয় আসা কলেজ ছাত্র ফরহাদ বলেন, সিলেটিদের ইফতারের প্রধান খাবার পাতলা খিচুড়ি সঙ্গে জিলাপি এবং বিশেষ কিছু ভাজাপোড়া আইটেম তাই ভাজাপোড়া খাবার কিনতে ছুটে এলাম জিন্দাবাজারে।

 

এছাড়া সিলেটে আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে অতিথিদের ইফতার করানোর রেওয়াজ রয়েছে। এসব অতিথির জন্যও ইফতারে খিচুড়ি কিংবা আখনি রান্না করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে আখনি, খিচুড়ি দুটিই থাকে। তাছাড়া আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর ক্ষেত্রেও আখনি বা খিচুড়ি থাকাটা অত্যাবশ্যকীয় মনে করেন এ অঞ্চলের লোকজন।  

 

 

 

এ বিষয়ে সিলেট মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের চিকিৎসক শিব্বির আহমেদ সোহেল বলেন, খিচুড়ির প্রধান উপাদান চাল ও ডালে আলাদা করে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। চালে থাকে সিস টিন, মিথিওনিন নামে অ্যামিনো অ্যাসিড। আর ডালে থাকে লাইসিন। শুধু ভাত খেলে দেহে লাইসিনের ঘাটতি হয়। আবার শুধু ডাল খেলেও সিস টিন ও মিথিওনিনের ঘাটতি রয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দুটি একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা পূরণ হয়। দেহের পেশি গঠন, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো, কোষ পুনর্গঠনে খিচুড়ি বেশ উপকারী।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন