টাকার প্রয়োজন ঠিক ততক্ষণ, যতক্ষণ তা মানুষকে মানুষ রাখে
রাজু আহমেদ ||
যে টাকার নেশায় পড়ে, সে পৃথিবীর সকল সৌন্দর্যের সামনে অন্ধ হয়ে যায়। টাকার প্রয়োজন ঠিক ততক্ষণ, যতক্ষণ তা মানুষকে মানুষ রাখে। যার কাছে টাকাই সব, তার থেকে দূরে থাকাই ভালো।
সম্পর্কের এপিঠ-ওপিঠে কিংবা স্বার্থের লেনদেনে টাকা জড়ালে মানুষ অমানুষে পরিণত হয়। তখন সে চুরি করে, ঘুষ নেয় কিংবা দুর্নীতির জালে জড়িয়ে মরণের দিকে এগিয়ে যায়। চোরের আশপাশের মানুষজন চুরি, লুটপাট কিংবা দুর্নীতি বুঝতে পারে না— এই বোধের অভাবই মানুষকে বিপথে ঠেলে দেয়।
টাকা দিয়ে খাবার কেনা যায়, আবাসন নিশ্চিত করা যায়, বিলাসিতা উপভোগ করা যায়। কিন্তু টাকা দিয়ে সুখ মেলে কি না, তা বিতর্কের বিষয়। টাকা কি মানসিক শান্তি কিনতে পারে? পূর্ণিমার জোছনা, বৃষ্টির রিমঝিম ধ্বনি কিংবা নদীর কলতান উপভোগের ক্ষমতা টাকার নেশায় নষ্ট হয়ে যায়। অবসর ও সুচিন্তা, টাকার মোহের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা কি সেই পথে হাঁটছি— এই প্রশ্ন করা জরুরি।
অর্থের প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না, তবে অতিরিক্ত লোভ পতনের কারণ হয়। যখন অসৎ মানুষের হাতে বিপুল সম্পদ জমে, তখন সে নিজেকে সর্বশক্তিমান ভাবতে শুরু করে। অর্থ অহংকার জন্ম দেয়, দাম্ভিক করে তোলে এবং মিথ্যার আবরণে আবদ্ধ করে। ফলে মানুষ হওয়া থেকে সে পিছিয়ে পড়ে।
সৎ ও সরলভাবে জীবনযাপনের জন্য যতটুকু অর্থ প্রয়োজন, ততটুকুই সততার পথে উপার্জন হোক। অন্যায়ভাবে অর্জিত অর্থ শেষ পর্যন্ত অবৈধ পথেই খরচ হয়ে যায়। অসততার সম্পদ যদি সামনে থাকেও, তা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রকৃত অর্থে, মানুষের মানসিকতা ও নীতিবোধের মধ্যেই আসল সম্পদ লুকিয়ে থাকে। তাই, মানবতার কল্যাণে যতটুকু আয় করা যায়, ততটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকা শ্রেয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন