চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি উপলক্ষে একদল ভ্রমণ করেছে ৭০৪৮ কিলোমিটার, অন্য দলটির ভ্রমণ একেবারেই নেই। শূন্য। এই একটি পরিসংখ্যানেই যথেষ্ট আইসিসির এই প্রতিযোগিতায় কী পরিমাণ বৈষম্য হয়েছে। তাতে দিন শেষে যদি ভারতই চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা হাতে নেয়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
তবুও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত এবং নিউজিল্যান্ডের জমজমাট ফাইনালের ওপর চোখ সবার। কে জিতবে এই ফাইনালে? ভারত নাকি নিউজিল্যান্ড। সে সঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদের জানার আগ্রহ, ফাইনালের উইকেট কেমন হবে, কে সুবিধা পাবে সবচেয়ে বেশি? স্পিনার না পেসারদের বান্ধব হবে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের ২২ গজের উইকেট? ব্যাটাররাই বা কেমন করবে এই উইকেটে?
ম্যাচের আগে উইকেট দেখার সুযোগ পান কোচ এবং অধিনায়ক। সে হিসেবে একাদশও তৈরি করেন তারা। উইকেট বুঝতে না পারলে চড়া মূল্যও দিতে হতে পারে। সে কারণে সতর্ক থাকে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের যে পিচে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে, তা একদম নতুন নয়। এই পিচে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির একটি ম্যাচ হয়েছিল।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ব্যবহৃত পিচেই হবে ফাইনাল। গত দু’সপ্তাহ কোনও খেলা হয়নি এই পিচটিতে। পরিচর্যা করার পর সেটিকে প্রায় নতুন করে তুলেছেন দুবাইয়ের মাঠকর্মীরা।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে রয়েছে মোট ১০টি উইকেট। যার চারটি এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যবহার করা হয়েছে। শেষ দু’টি ম্যাচের পিচ ফাইনালের জন্য ব্যবহার করার কথা ভাবার সম্ভাবনা ছিল না। কারণ, এত কম সময়ে ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের জন্য পিচ প্রস্তুত করা সম্ভব ছিল না।
যে কারণে, ভারত-বাংলাদেশ ও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ব্যবহৃত পিচের মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়ার কথা ভাবা হয়। সবদিক খতিয়ে দেখে ২৩ ফেব্রুয়ারি খেলা হওয়া পিচে ফাইনাল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইসিসির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ফাইনালের পিচ একদম নতুন নয়। তবে ১৪ দিন সময় পাওয়া গেছে শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর। এ সময়ের মধ্যে পিচের ক্ষত সারিয়ে আবার নতুন করে তোলা যায়। যেমন ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের পিচও নতুন ছিল না। ২০ ফেব্রুয়ারির ম্যাচের ১৪ দিন আগে ওই পিচে আইএল টি-২০র ম্যাচ হয়েছিল। একাধিকবার ব্যবহার হওয়ায় সেই পিচটিকে ফাইনালের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। প্রথম থেকেই মাঠকর্মীরা অত্যন্ত যত্ন নিয়ে কাজ করছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে গুরুত্ব দিয়ে। পিচের পাশাপাশি আউটফিল্ডেরও নিয়মিত যত্ন করা হয়েছে।’
ধারণা করা হচ্ছে, রোববার দিবা-রাত্রির ম্যাচে এই উইকেট থেকে কিছুটা সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। সে ক্ষেত্রে সুবিধাটা বেশি পাবে ভারতই। বরুণ চক্রবর্তী এমনিতেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবার প্রথম খেলতে নেমে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। সঙ্গে আছেন রবিন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদিপ যাদবরা রয়েছেন। যাদের যে কেউ একজন ক্লিক করলে কিউই ব্যাটিং ধ্বসে পড়বে। ভারতের সুবিধা হলো, চার স্পিনারই রয়েছেন ফর্মে।
ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেয়া কিউই পেসার ম্যাট হেনরি রয়েছেন চোটে। তিনি খেলতে পারবেন কি না সন্দেহ। তবে মিচেল সান্তনার, মিচেল ব্রেসওয়েল এবং রাচিন রাবিন্দ্রারাও দারুণ ফর্মে আছেন। বল ঘোরাতেও তারা সক্ষম। যদিও ভারতীয় ব্যাটাররা স্পিন খেলতে সিদ্ধহস্ত।
সুতরাং, শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে সুবিধাটা বেশি পাচ্ছে ভারতই। যার ফলে, কিউই ব্যাটারদের বেশ সতর্ক থাকতে হবে। গত কয়েক দিন দুবাইয়ে বেশ গরম পড়ায় পানি দিয়েও আদ্র রাখা যাচ্ছে না। পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে পিচ কিছুটা মন্থর হতে পারে। আর্দ্রতা বজায় রাখতে প্রায় বিকাল পর্যন্ত ঢেকে রাখা হচ্ছে ফাইনালের ২২ গজ।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন