ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় হুতি বিদ্রোহীদের একাধিক নেতা নিহত হয়েছেন বলে হোয়াইট হাউস রবিবার জানিয়েছে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তারা এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়া ও লোহিত সাগরে চলাচলকারী জাহাজে গোষ্ঠীটির হামলা বন্ধ করে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ শনিবারের বিমান হামলা নিয়ে এবিসি নিউজকে বলেন, ‘হামলায় একাধিক হুতি নেতাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছিল এবং তারা নিহত হয়েছেন।’
এ ছাড়া ফক্স নিউজকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করেছি এবং ইরানকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি, এবার যথেষ্ট হয়েছে।
’
ওয়াল্টজ আরো জানান, ‘ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপের সম্ভাবনা খোলা রয়েছে।’
শনিবারের মার্কিন হামলা ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ক্ষমতায় আসার পর হুতির ওপর প্রথম আঘাত। এতে অন্তত ৩১ জন নিহত ও ১০১ জন আহত হয়েছে বলে হুতির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রবিবার জানিয়েছে। তেহরান সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা করা এই গোষ্ঠী বলছে, গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে তারা বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালাচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে হুতি লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে অসংখ্য ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৭৪ বার মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও ১৪৫ বার বাণিজ্যিক জাহাজ আক্রান্ত হয়েছে, যা বিশ্ববাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ পরিবহনকারী এই গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফরমে এক পোস্টে শনিবার এই হামলার ঘোষণা দিয়ে হুতি নেতাদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘তোমাদের হামলা আজ থেকেই বন্ধ করতে হবে। যদি না করো, তবে এমন বিধ্বংসী আঘাত আসবে, যা আগে কখনো দেখোনি!’
গত মাসে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে এক চিঠিতে পারমাণবিক আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, চুক্তি না হলে বিষয়টি ‘সামরিকভাবে’ সমাধান করা হবে। তেহরান সেই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ‘হুমকির’ মধ্যে তারা কোনো আলোচনা করবে না।
ওয়াল্টজ এবিসিকে স্পষ্টভাবে বলেন, ‘ইরান কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না।
এটি নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ বিবেচনায় রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তারা হয় স্বেচ্ছায় এটি পরিত্যাগ করবে এবং স্বচ্ছভাবে তা প্রমাণ করবে, অথবা অন্য যেকোনো পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। তবে যেকোনো পরিস্থিতিতেই আমরা এমন এক বিশ্ব চাই না, যেখানে আয়াতুল্লাহদের হাতে পারমাণবিক অস্ত্রের বোতাম থাকবে।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন