হবিগঞ্জের সন্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সারা জাগানো ফুটবল খেলোয়াড় দেওয়ান হামজা চৌধুরী নিজের গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছেছেন। মা, স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে আজ (সোমবার) বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এরপর সড়ক পথে তিনি হবিগঞ্জে এসে পৌঁছান বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে।
এর আগেও হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে এসেছিলেন হামজা চৌধুরী। তবে এবার তার আসায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এবার তিনি এসেছেন নিজ দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে খেলতে।
আগামী ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বছাই পর্বে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হবে হামজা চৌধুরীর।
দেশের হয়ে খেলতে এসেছেন, তাই আনন্দের শেষ নেই হবিগঞ্জেবাসীর। বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। হামজাকে বরণে পথে পথে তোরণ নির্মাণ করা হয়। বাড়ির প্রবেশ পথেও তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা সারার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে একটি মঞ্চ। অতিথিদের আপ্যায়নে রান্নাবান্নার আয়োজনও করতে দেখা গেছে।
হামজাকে বরণে হবিগঞ্জে যত আয়োজন
এর আগেও বেশ কযেকবার দেশে এসেছেন দেওয়ান হামজা চৌধুরী। দেড় বা ২ বছর বয়স থেকেই তার দেশে আসা শুরু; কিন্তু এবারের আসাটা ভিন্ন। সাথে আসছেন স্ত্রী, সন্তানরাও। তাদের জন্য বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর। বধূ প্রথমবার আসছেন শ্বশুরালয়ে। তাই বিদেশি বধূকে বরণে ব্যাপক আয়োজন করেছেন স্বজনরা।
বাড়ি সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। বাড়ির প্রবেশপথসহ পথে পথে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। পোস্টার, ফেস্টুন তো আছেই। লাইটিং করা হয়েছে পুরো বাড়িতে। আগত অতিথিদের ইফতারও করানো হবে। বাড়ির পাশে খালি জায়গায় ছোট একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ছোট্ট পরিসরে তিনি আগত অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময় করবেন।
হামজা চৌধুরীর চাচা দেওয়ান মাসুদ বলেন, ২০১৪ সালে সর্বশেষ দেশে এসেছিল হামজা। ২০২২ সালে সে বিয়ে করে। এরপর আর তার দেশে আসা হয়নি। আমরা আনন্দে উদ্বেলিত। ভাতিজার সাথে এবার তার স্ত্রী এবং নাতি, নাতনিদের আমরা দেখবো। মূলত তাদের বরণ করতেই বাড়ি সাজানো হয়েছে। আমাদের মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছে, যা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। শুধু আমাদের বাড়ি নয়, জেলাজুড়ে মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
হামজা চৌধুরীর বাবা দেওয়ান গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘অনেকেই সংবর্ধনার আয়োজন করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু আমি বারণ করেছি। একে তো রমজান মাস। আবার সে লম্বা বিমান সফর করে আসছে। ক্লান্ত থাকবে। অন্যরাও ক্লান্ত থাকবে। তাই কাউকে কষ্ট দিতে চাইনি। বলেছি এটিই তো শেষ আসা নয়। যেহেতু দেশের হয়ে খেলবে পরেরবার এলে সংবর্ধনা দেওয়া যাবে। এবার আমি নিজে বাড়িতে ছোট্ট আয়োজন করেছি। যেহেতু বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসছে, তাই সবার সম্মানে এ আয়োজন। ছোট্ট একটি মঞ্চ তৈরি করেছি। এখানে সবার সাথে কুশলবিনিময় করলো, তারপর সবাইকে নিয়ে ইফতার। ব্যস, এটুকুই। একটি রাত বাড়িতে থাকাই মূল উদ্দেশ্য। মঙ্গলবার ঢাকায় চলে যাবে সবাই।’

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন