বেলুচিস্তানের মানবাধিকার কর্মী মাহরাং বালুচের মুক্তি দাবি অ্যামনেস্টির

gbn

শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার চর্চার জন্য আটক বেলুচিস্তানের মানবাধিকার কর্মী মাহরাং বালুচ ও অন্যান্যদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। 

এর আগে শনিবার সকালে মাহরাং বালুচসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে কোয়েটা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে সংস্থাটি জানায়, শনিবার থেকে মাহরাং বালুচকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়েছে এবং তাকে তার আইনজীবী ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। 

সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, বেলুচিস্তানে নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটক বৃদ্ধির ঘটনা গভীর উদ্বেগের বিষয়।

 

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের উচিত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার চর্চার জন্য আটক মাহরাং বালুচ এবং অন্যান্যদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া। পাশাপাশি বেলুচিস্তানের কর্মীদের বেআইনিভাবে আটক ও হয়রানি বন্ধ করা উচিত।

জাতিসংঘের মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের বিশেষ দূত ম্যারি ললরও মাহরাং বালুচের গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, মাহরাংসহ অনেক মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ধরনের পদক্ষেপ মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে। 

 

শুক্রবার পাকিস্তানের কোয়েটায় বেলুচ বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ টিয়ার গ্যাস, জলকামান ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। সংঘর্ষের ঘটনায় এক বিক্ষোভকারী নিহত হন বলে জানা গেছে। এ বিক্ষোভ থেকেই বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী মাহরাং বালুচকে আটক করা হয়।

পরে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ।

 

পুলিশ অভিযোগ করেছে, মাহরাং বালুচসহ আরও ১৫০ জনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন (এটিএ) এবং পাকিস্তান দণ্ডবিধির (পিপিসি) বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি, মর্গ থেকে জোরপূর্বক মৃতদেহ নেওয়া এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মাহরাং বালুচের বাবা, বালুচদের অধিকারের জন্য লড়াইয়ের জাতীয়তাবাদী নেতা নিখোঁজ হন ২০০৯ সালের শুরুর দিকে। আবদুল গাফফার ল্যাঙ্গোভ পাকিস্তানি সরকারি চাকরি করতেন, কিন্তু নিরাপদ বেলুচিস্তান গড়তে তিনি চাকরি ছেড়েছিলেন।

 

তিন বছর পরে মাহরাংয়ের ফোনে একটি কল আসে, বলা হয়-তার বাবার মৃতদেহ প্রদেশের দক্ষিণের জেলা লাসবেলায় পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারের আগে মাহরাং বিবিসিকে জানান, তার বাবার শেষ দিনগুলো নিয়ে পাঁচবছর দুঃস্বপ্ন দেখেছেন মাহরাং। তিনি বাবার কবরে গিয়ে নিজেকে সান্ত্বনা দিতেন এই বলে যে- বাবা আর বেঁচে নেই; তার ওপর আর নির্যাতন চালানো যাবে না।

এরপর ২০১৭ সালে তার ভাইকে নিরাপত্তা বাহিনী তুলে নিয়ে যায় এবং প্রায় তিন মাস আটকে রাখে।

মাহরাং বলেন, এটা ভয়ংকর ছিল। আমি আমার মাকে বিশ্বাস করিয়েছিলাম যে– আমার বাবার সঙ্গে যা ঘটেছে, তা আমার ভাইয়ের সঙ্গে ঘটবে না। কিন্তু সেটাই হয়েছে।

এরপর মাহরাং গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। মৃত্যুর হুমকি, আইনি ঝামেলা এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরও ৩২ বছর বয়সী এই নারী এখন প্রতিবাদী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। কিন্তু বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর গত শনিবার মাহরাং গ্রেপ্তার হন।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন