জয়নাল আবেদীন, কমলগঞ্জ //
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় প্রবাহিত খরস্রোতা ধলাই নদীর পাশের লোকদের দুঃখ বলে পরিচিত। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য হতে আসা এ নদীটি। ত্রিপুরা হতে প্রতি বৎসর বর্ষাকালে উজান হইতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে পলি মাটি চলে আসে। পলি মাটিতে ধলাই নদী ভরাট হওয়ায় বন্যায় নদী তীরবর্তী গ্রামের বাড়িঘর ক্ষেতের ফসল তলিয়ে গিয়ে চরম দুর্ভোগ দেখা দিছে।
সরেজমিনে ধলাই নদী এলাকা রহিমপুর, মুন্সীাজার ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়ি বাঁধে বন্যা পরবর্তী প্রায় ৭ মাস অতিবাহিত হলেও বেড়িবাঁধগুলো স্থায়ীভাবে মেরামতের কাজ এখনো শুরু হয়নি। ফলে নদীর পাড়ের মানুষেরা ঝুঁকিতে রয়েছেন। নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাঁধগুলো দ্রুত মেরামত করা না হলে অল্প বৃষ্টিতে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছরের বন্যায় ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে কয়েক দফা বন্যা হয়েছে। বন্যায় ফসল ও ঘরবাড়ি হারিয়েছেন ধলাই নদী ও শাখা নদীর তীরবর্ত্তী গ্রামের লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। ঘরবাড়ী, জমির ফসল হারিয়ে লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েন। ফলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত ও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙ্গাগুলো যেভাবে মেরামত করা হয়েছে সেগুলো ও ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও বন্যা পরবর্তী ৭ মাস চলে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এগুলো স্থায়ীভাবে কাজ এখনো শুরু করেনি। নদী ভাঙ্গন এলাকার লোকজন জানান বর্ষাকাল চলে আসছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ভাঙ্গনগুলো মেরামত জরুরী প্রয়োজন। চৈত্র-বৈশাখ মাসে বৃষ্টি হলে ফের বন্যা হওয়ার আশংকা করছেন তারা।
ঝুঁকিপূর্ণ নদীর পাড়ের মানুষেরা জানান, বৃষ্টি আসলেই আতঙ্কের মধ্যে থাকি। কখন যে বৃষ্টি হয় আর উজানের পাহাড়ি ঢলে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ধলাই নদীর অন্ততপক্ষে ১৩টি ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙ্গা বাঁধ মেরামত করা জরুরী প্রয়োজন। বন্যা পরবর্তী দীর্ঘদিন চলে গেলেও এখনো বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়নি। শুষ্ক মৌসুমে কাজ না করালে আমারা ফের বন্যায় প্লাবিত হবো।
তারা আরও বলেন, এখন নদীর পানি কম কাজ করালে চুরি করতে পারবেনা ঠিকাদার। নদীতে পানি হলে কাজ শুরু করবে। আর একটু কাজ করে বলবে নদীর স্রোতে সব তলিয়ে গেছে।
ধলাই নদীর চৈত্রঘাট এলাকার নাজমুল ইসলাম বলেন, গত বছর এলাকায় দিয়ে ধলাই নদী ভেঙে সবকিছু নিয়ে গেছে। এখনও নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এই অংশে ভাঙ্গন দেখা দিবে।
রহিমপুর ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ধলাই নদী হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে এবং ভাঙ্গন বাঁধ স্থায়ীভাবে মেরামত করা জরুরী।
বর্ষা শুরুর আগে স্থায়ী মেরামত না হলে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এই অংশে আবারও নদী ভাঙ্গন দেখা দিবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানাচ্ছি ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মান করার জন্য।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ জানান, এই অর্থ বছরে ধলাই নদীর ভাঙ্গা বাঁধ মেরামত করা হবে। অনেকগুলো কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। কিছু কাজর চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে সেগুলো মেরামত করা হবে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন