যুক্তরাষ্ট্রের ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে যেভাবে দেখছে চীন

gbn

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ২ এপ্রিল ট্রাম্প যেসব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তারই অংশ হিসেবে বুধবার (৯ এপ্রিল) এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। তবে চীন, কানাডা ও মেক্সিকো বাদে অন্যান্য দেশের ওপর নতুন শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্প শুরুতে চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও গত সপ্তাহে এক লাফে ৩৪ শতাংশ ও পরে আরও ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেন। এর ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপরে ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে চীন। এরপরে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ২১ শতাংশ বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র।

 

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের একতরফা শুল্ক বৃদ্ধিকে ‘গুন্ডামি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীন। সেই সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও দায়ের করেছে বেইজিং।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ একটি ভুলের ওপর আরেকটি ভুল, যা যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা দমনমূলক আচরণকেই প্রতিফলিত করে।

 

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, আমরা পেছাবো না। চীন উসকানিকে ভয় পাই না। তিনি কোরিয়ান যুদ্ধের সময় চীনা নেতা মাও সেতুংয়ের একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে বলা হয়, এই যুদ্ধ যত দীর্ঘই হোক, আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না।

চীনের অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি ও সতর্কতা

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে চীন তাদের অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি জোরদার করছে। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ ও শিক্ষার ব্যাপারে চীনা নাগরিকদের সতর্ক করেছে। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও চীনবিরোধী আইন নীতির কারণে ভ্রমণ ও শিক্ষা গ্রহণে ঝুঁকি রয়েছে।

 

সম্প্রতি মার্কিন অঙ্গরাজ্য ওহাইওতে একটি বিল পাস হয়েছে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চীনের প্রভাব কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই প্রতিক্রিয়ায় চীন শিক্ষা খাতে এই সতর্কতা জারি করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের কারণে চীনা কোম্পানিগুলোর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে লাভবান হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। যেহেতু চীনের অর্থনীতি রপ্তানিনির্ভর, তাই এই অতিরিক্ত শুল্কের চাপ সামলানো দেশটির জন্য কঠিন হতে পারে। কারণ চীনের অর্থনীতি বর্তমানে মূল্যহ্রাস বা ডিফ্লেশনের মধ্যে রয়েছে।

তাদের মতে এই শুল্কযুদ্ধ চলতে থাকলে চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মান আরও কমে যেতে পারে। তখন এই দুর্বল ইউয়ান অন্যান্য দেশের তুলনায় চীনা পণ্যকে সস্তা করে তুলবে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গত ১৯ মাসের মধ্যে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের মান সর্বনিম্নতে নেমে এসেছে।

 

এত প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক কমাচ্ছে না চীন। আবার দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরুরও কোনো ইঙ্গিত এখনো দেখা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শীর্ষ দুই অর্থনীতির এই বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

 

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন