ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তপ্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেশকিছু জেলা। এবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার আমতলা এবং মুর্শিদাবাদের সুতি থানার সাজুর মোড় এলাকা।
এই দুই জেলায় পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ, সরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়াসহ অবরুদ্ধ করা হয়েছে ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। জাতীয় সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বেশকিছু গাড়িতেও আন্দোলনকারীরা আগুন ধরিয়ে দেন। পরিস্থিতির সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে মুর্শিদাবাদ জেলার সুতিতে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী মিছিল করেন। সেই মিছিল থেকে ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে স্লোগান দিয়ে এগোতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
তখন রাজ্য পুলিশ পথ আটকালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের ওপর বোমা হামলা হয় বলে জানা গেছে। ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সুতির ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। আন্দোলনকারীরা ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করেন এবং সেই জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়িসহ অন্যসব গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের কাঁদানে গ্যাসে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীও আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সুতি থানা পুলিশ জানিয়েছে, সুতি এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করা রয়েছে। একসঙ্গে দুজনের বেশি লোক চলাফেরা করলে তাদের গ্রেফতার করা হবে।
অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আমতলায় মিছিল চলাকালীন পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হন।
পুরো ঘটনায় ১০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য এবং একাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত পুলিশ সদস্য এবং আন্দোলনকারীদের মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
গত ৩ এপ্রিল গভীর রাতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস হয় দেশটির সংসদে। এই বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১২৮টি, আর বিপক্ষে ৯৫টি। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হয়। তারপর থেকেই ভারতের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ জানাচ্ছে দেশটির বিভিন্ন গণসংগঠন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন