অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানানোর একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেছেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গাছের নিচে একটি সাধারণ টেবিলে দু-তিনটি গামছা দিয়ে মঞ্চ সাজানো হয়েছিল। চটের ছালায় তুলির আঁচড় দেওয়া হয়, আর ঠিক সেই মুহূর্তে আশ্চর্যজনকভাবে কোকিলের কলরব বার্তাটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার এই নববর্ষের ভাষণের মঞ্চ নিয়ে ব্যাপক প্রশংসা করা হচ্ছে।
সাংবাদিক মোস্তফা কামাল লিখেছেন, ‘গাছের নিচে একটি পুরনো টেবিল। দু-তিনটা গামছা। চটের ছালায় একটু তুলির আঁচড়। ব্যস, হয়ে গেল প্রধান উপদেষ্টার নববর্ষের শুভেচ্ছা ভাষণ।
’
তিনি আরো বলেন, ‘যমুনার সূত্র জানিয়েছে, সব মিলিয়ে খরচ হাজার দুয়েক। কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কম্পানি হায়ার করতে হয়নি। শ্রাদ্ধ করতে হয়নি দেশের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ইউনূস স্যারের বাংলা নববর্ষের ভাষণ রেকর্ড করছিলাম।
কাল (আজ) সকালে প্রচারিত হবে।’
রেকর্ডিংটা করার জন্য বেছে নিয়েছিলাম যমুনারই ছায়াঘেরা এক সবুজ লন। রেকর্ডিং শুরু করব—কোথা থেকে উড়ে এলো একটা কোকিল। কুহু সুরে গান গাইতে শুরু করল আমাদের মাথার ওপরের গাছে বসে। স্যার হাসিমুখে বললেন, ‘যাক, আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের আর দরকার হবে না! সাড়ে তিন মিনিট ধরে চলল স্যারের ভাষণ।
আর সেই কোকিল পুরোটা সময় গান গেয়ে সঙ্গ দিল আমাদের।’
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, “হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রধান উপদেষ্টার নববর্ষের শুভেচ্ছা বাণী রেকর্ড করা হবে আউট ডোরে। সব ঠিকঠাক করে যখন রেকর্ডিংয়ের সময় আসে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেখা যায় এক কোকিলের আশ্চর্যজনক উপস্থিতি। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই রসিকতা করে বলে বসেন, ‘তোমরা এই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক কিভাবে জোগাড় করলে।’”
উপ-প্রেসসচিব আরো লিখেছেন, ‘আজ যারা টিভি কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উনার শুভেচ্ছা বাণী শুনেছেন, নিশ্চিতভাবেই এই কোকিলের ডাকও খেয়াল করেছেন। যে রকম হাসি-আনন্দের মাঝে এই শুভেচ্ছা বার্তা ধারণ করা হয়েছে, আশা করছি আপনাদের সবার নতুন বছরও এ রকম হাসি আনন্দে ভরে থাকবে।’
ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এই অভ্যুত্থান বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের প্রেরণা দেয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এই বাংলা নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।’
তিনি আরো বলেন, ‘আসুন, আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন