সিলেট জুড়ে কৃষকরা এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েই শঙ্কায়

gbn

সিলেট প্রতিনিধি : গোঠ সিলেট জুড়ে কৃষকরা এ বছর বোরো ধানের ক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েই শঙ্কায় পড়েছেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) জানিয়েছে, দেশে এবার বোরোর উৎপাদন ভালো হয়েছে। কিন্তু তাপ প্রবাহের জন্য কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হতে পারে। ধানে চিটা হতে পারে। এ অবস্থায় তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে ধান রক্ষায় কৃষককে আগাম পরামর্শ  দেওয়া হয়েছে। জমিতে যেন কোনো ভাবেই পানির ঘাটতি না পড়ে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কারণ, একদিকে তাপমাত্রা বেশি। অন্যদিকে বৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে ব্লাস্টের ঝুঁকি রয়েছে।
তবে এ পরিস্থিতির মধ্যেও হাওরের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। দ্রুত এই ধান ঘরে তুলতে পারলে বিরূপ আবহাওয়া থেকে হাওরের ধান রক্ষা করা সম্ভব হবে। এছাড়া, উত্তরাঞ্চলে অধিকাংশ জমির ধান ফুলে বেরিয়েছে। ধানের চেহারা বেশ ভালো। তবে এ সময় বৃষ্টি হলে আবাদ নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কার মধ্যে থাকতে হতো না বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। তবে দেশের তোলনায় সিলেটে বোরো ধানের তেমন লক্ষ্যমাত্রা পৌছাতে পারেন নি স্থানীয় কৃষকরা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশে গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম। তবে চলতি এপ্রিল মাসের দুই-এক দিনের মধ্যে আবার ১৭/১৮ তারিখের দিকেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বৃষ্টি হলে রোগবালাইয়ের হাত  থেকেও বোরো রক্ষা পাবে। কারণ, ইতিমধ্যে যশোর জেলায় সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া, ৪০টি জেলায় মৃদু থেকে তীব্র তাপ প্রবাহ বয়ে গেছে। নেত্রকোনা জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে পাঁচটি হাওর উপজেলায় বোরো ধান কাটা আংশিক ভাবে শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরো দমে বোরো ধান কাটা শুরু হবে। সিলেটের হবিগঞ্জ, সনুমগঞ্জ, মৌলভীবাজার এলাকায় হাওর গুলোতে বোরো ধান কাটা শুরু হলেও তেমন ভালো ফসল পাননি বলে কৃষকরা জানান। বর্তমানে যে হারে বোরো জমি গুলো রোদ পাচ্ছে তাতে ফলনও ভালো হবে না। তবে একটা বৃষ্টি হলে আরও ভালো হত বলে কৃষকরা জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য বলছে, ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়েছে। আর বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টন। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ৪৬ টন। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেশে বোরোর উৎপাদন ছিল ২ কোটি ১০ লাখ টন। আর ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ২ কোটি ৭ লাখ টন, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ২ কোটি ১ লাখ টন ও ২০২০-২১ অর্থ বছর ১ কোটি ৯৮ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়। এ দিকে সম্প্রতি দেশে চাল উৎপাদন পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)। সংস্থাটির বৈদেশিক কৃষিসেবা বিভাগের (এফএএস) ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাগ্রিকালচারাল প্রডাকশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ধানের আবাদ কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশে এবার চালের উৎপাদন ৪ লাখ টন কমতে পারে। এ প্রসঙ্গে ব্রির মহাপরিচালক কৃষি বিজ্ঞানি ড. খালেকুজ্জামান বলেন, দেশের এবার ধানের আবাদ কম হচ্ছে। এই তথ্য তারা কোথা থেকে পেয়েছে বলতে পারছি না। তবে উৎপাদন কম হতে পারেÑএটা বলার সময় এখনো আসেনি। কারণ, তাপমাত্রা ও অনাবৃষ্টির কারণে আমরা উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছি। কিন্তু এমন তো হতে পারে আমাদের শঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন