ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে যেতে হলে লিঁওর বিপক্ষে জিততেই হতো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। রেড ডেভিলরা জিতেছেও। তবে জয়ের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিতে হয়েছে, সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে হয়েছে এবং ঘাম ঝরাতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লিঁওকে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়েছে ম্যানইউ। অ্যাওয়ে লেগে ২-২ গোলে ড্র করেছিল রুবেন অ্যামোরিমের দল। দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ ব্যবধানে এগিয়ে সেমিফাইনালে গেছে ম্যানইউ।
খেলার মূল সময় ৯০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ছিল ২-২। ফল বের করে আনতে আরও আধ ঘণ্টা অতিরিক্ত সময়ের বাঁশি বাজান রেফারি। বাড়তি সেই ৩০ মিনিটেই হয় শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই। এ সময়ের মধ্যে ৫ বার বল জালে প্রবেশ করে। যা ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতায় প্রথম।
১০৯ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লিঁও। রায়ান চেরকি ও আলেকজান্দ্রে লাকাজেতের গোল ম্যানইউকে স্তব্ধ করে দেয় ও সেমিফাইনালের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায় লিঁওকে।
এরপর ৭ মিনিটের ব্যবধানে আরও ৩ গোল করে ম্যানইউ। ১১৪ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজ, ১২০ মিনিটে কোভি মাইনো গোল করে ম্যানইউকে ৪-৪ সমতায় ফেরান। সর্বশেষ ১২১ মিনিটে হেড দিয়ে গোল করে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে উন্মাদনা ছড়িয়ে দেন হ্যারি ম্যাগুয়ের। যা ৫-৪ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে ম্যানইউর।
এর আগে ম্যাচের শুরুতেই (১০ মিনিটে) এগিয়ে ম্যানইউ। দলগত প্রচেষ্টার দারুণ ফিনিশিং দিয়ে গোল করেন মানুয়েল উগার্তে। বিরতির ঠিক আগে দিয়োগো দালোত গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে ছয় মিনিটের ব্যবধানে লিঁওর কোরেটিন টোলিসো (৭১ মিনিট) ও নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর (৭৭ মিনিট) দুটি গোল ম্যাচে উত্তেজনা ফিরিয়ে আনে এবং স্কোরলাইন সমতায় ফেরায়।
৮৯ মিনিটে বাজে ফাউলের জন্য লাল কার্ড (দ্বিতীয় হলুদ কার্ড) দেখেন টোলিসো। এতে ১০ জনের দলে পরিণত হয় লিঁও। একজন কম খেলেও অতিরিক্ত সময়ে আরও দুটি গোল করে সবাইকে চমকে দেয় লিঁও। চেরকির চমৎকার গোল ও লাকাজেতের ঠান্ডা মাথার পেনাল্টি ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে দেয় লিঁওকে।
১১৪ মিনিটে ফার্নান্দেজের পেনাল্টি ম্যানইউ নতুন করে আশা দেখায়। এরপর বদলি খেলোয়াড় কোবি মাইনু অসাধারণ ফিনিশিং দিয়ে স্কোরে সমতা ফেরান, যা মনে হচ্ছিল ম্যাচের শেষ শট।
তবে সবকিছুর শেষ কথা বলেছিলেন ম্যাগুয়ার। তিনি ক্যাসিমিরোর ক্রস থেকে হেড করে গোল করে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডকে এনে দেন বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত আনন্দ। ইউরোপা লিগের ইতিহাসে এটাই ছিল সবচেয়ে দেরিতে আসা একমাত্র জয়।
ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় ম্যানইউ এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত—ইউরোপের কোনো বড় ম্যাচে ১২০ মিনিটে প্রথম দল হিসেবে দুটি গোল করল ম্যানইউ। এই ম্যাচেই প্রথমবার অতিরিক্ত সময়ে পাঁচটি গোল হয়।
এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে ওল্ড ট্রাফোর্ড ম্যানইউর জন্য খুব একটা সুখের স্থান ছিল না। ইংল্যান্ডের অন্যতম ভয়ঙ্কর ভেন্যু হিসেবে পরিচিত এই মাঠেই ম্যানইউ এই মৌসুমে ১৮ লিগ পরাজয়ের মধ্যে ৭টিই হেরেছে। সে হিসেবে বৃহস্পতিবারের ম্যাচটি ছিল অনেকটা প্রত্যাশার বাইরে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন