যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে ধস, ডলারের দাম ৩ বছরে সর্বনিম্ন

gbn

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান জেরোম পাওয়েলের বিরুদ্ধে নতুন করে আক্রমণ শুরুর জেরে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট বেড়েছে। ফলে ধস নেমেছে মার্কিন শেয়ারবাজার ও ডলারের দামে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) দিনের শেষে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ কমে যায়, যা বছরের অন্যতম বড় একদিনের পতন। প্রযুক্তিনির্ভর নাসদাক কম্পোজিট সূচকের পতন হয়েছে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ, যা বছরের শুরুর তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ কম।

 

এদিন তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে মার্কিন ডলারের দাম। এক পর্যায়ে বিশ্বের প্রধান মুদ্রাগুলোর বিপরীতে এর দাম কমে দাঁড়ায় ৯৭ দশমিক ৯২৩-এ।

 

একই সঙ্গে, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ডও বিক্রি করেন বিনিয়োগকারীরা। এতে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার বেড়ে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড সাধারণত নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচিত হয়।

এ অবস্থার প্রভাব পড়েছে এশীয় বাজারেও। মঙ্গলবার টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক, হংকংয়ের হ্যাং সেং ও তাইওয়ানের তাইএক্স সূচকে যথাক্রমে ০ দশমিক ৮, ০ দশমিক ৬ ও ০ দশমিক ৫ শতাংশ পতনের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হয়েছে।

সংকটের নেপথ্যে

এই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে মূলত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েলকে ‘মেজর লুজার’ এবং ‘মিস্টার ঠু লেট’ বলে সমালোচনা করার প্রেক্ষিতে। তিনি ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমাতে দেরি করার জন্য দায়ী করেছেন।

 

গত সপ্তাহেই ট্রাম্প বলেছিলেন, পাওয়েলকে অপসারণ করা উচিত এবং এই কাজটা যত দ্রুত হয়, ততই ভালো।

শুক্রবার হোয়াইট হাউজের শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হাসেট জানান, তাদের প্রশাসন পাওয়েলকে সরানোর আইনি পথ খুঁজছে। যদিও পাওয়েলের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের মে মাসে।

ফেডারেল রিজার্ভ গত ডিসেম্বরে শেষবার সুদের হার কমানোর পর থেকে নতুন করে হার কমানো নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তাদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

 

কী বলছেন পাওয়েল

গত সপ্তাহে এক বক্তব্যে পাওয়েল সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে দুর্বল প্রবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির সম্মুখীন করতে পারে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুটি মূল লক্ষ্য—চাকরি ও মূল্য স্থিতি—একসঙ্গে অর্জনে বাধা সৃষ্টি করবে।

পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস-এর জোসেফ ই গ্যানন বলেন, রাজনীতিকেরা সাধারণত স্বল্পমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও চাকরি বৃদ্ধির জন্য সুদের হার কমাতে চান। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তাতে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। বাজার বুঝতে পারছে, ট্রাম্প হয়তো ফেডের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নষ্ট করতে পারেন।

২০১৭ সালে ট্রাম্পই প্রথম পাওয়েলকে মনোনয়ন দেন, পরে ২০২১ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাকে আরেক দফা মেয়াদের জন্য নির্বাচিত করেন। পাওয়েল এরই মধ্যে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট চাইলেও তিনি পদত্যাগ করবেন না এবং শুধু দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলেই তাকে সরানো সম্ভব।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন