জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা তাই টিসিবি’র পণ্য কিনতে ভিড় জমান। কিন্তু সিলেটে টিসিবি উদ্ভট কাণ্ড ঘটাচ্ছে। এখানে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম যতো, তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে টিসিবি!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের পাইকারি বাজারে তুরস্ক থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। চীন থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। আর দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালীঘাটের মেসার্স কিসমত ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী নীলাঞ্জন দাস টুকু সিলেটভিউকে বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। গেল প্রায় সপ্তাহ-দশদিন ধরে তুরস্কের পেঁয়াজ ২০ টাকা, চীনের পেঁয়াজ ১৮-২০ টাকা এবং দেশিয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।’
কিন্তু টিসিবি’র ডিলাররা তুরস্ক থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। নগরীর রিকাবীবাজার ও বন্দরবাজার এলাকায় টিসিবি’র ডিলারদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
টিসিবি’র ডিলাররা একদিকে বাজার দরের চেয়ে ৫ টাকা বেশি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন, অন্যদিকে পেঁয়াজ না কিনলে গ্রাহকদের কাছে ডাল ও তেল বিক্রি করছেন না তারা!
বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেছেন টিসিবি’র সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ইসমাইল মজুমদার।
তিনি সিলেটভিউকে বলেন, ‘বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বাধ্য হয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন টিসিবির ডিলাররা। কারণ, এখন পেঁয়াজের চাহিদা কমে গেছে। আমরা ডিলারদের ১৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ দেই। এখন তারা তো ২০ টাকা বা এর কমে বিক্রি করতে পারবে না।’
ইসমাইল মজুমদার বলেন, ‘পেঁয়াজের চাহিদা নেই, কিন্তু ডিলারদেরকে প্রতিদিন পেঁয়াজ নিতে হচ্ছে। একদিকে তারা পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছে না, অন্যদিকে প্রতিদিন পেঁয়াজ নিতে হয়। এখন ডিলাররা ২৫ টাকার নিচে পেঁয়াজ বিক্রি করলে তারা টিকবে না। এমনিতেই লস দিয়ে যাচ্ছে তারা। ভবিষ্যতে লাভ করতে পারবে, এ আশায় এখন লস দিচ্ছে তারা।’
টিসিবি’র এই কর্মকর্তা জানান, সিলেটে ৮০ জন ডিলারের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ডিলাররা যদি পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পারে, তাহলে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হবে। এজন্য তারা গ্রাহকদের কাছে পেঁয়াজের সাথে ডাল বা তেল বিক্রি করছে।’
এদিকে, টিসিবি’র এমন কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, ডাল, তেল বা পেঁয়াজ, যার যে চাহিদা, সে সেই পণ্য নেবে। এখানে ভোক্তাকে ডাল বা তেলের সাথে পেঁয়াজ নিতে বাধ্য করা হবে কেন।
নগরীর রিকাবীবাজারে নিলুফার ইয়াসমিন নামের এক গৃহবধু টিসিবি’র ট্রাক থেকে ডাল কিনতে এসেছিলেন। কিন্তু তার কাছে শুধু ডাল বিক্রি করা হয়নি।
নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, ‘এ কেমন কাণ্ড বলুন! আমি তেল নেব না, ডাল নেব। অথচ তারা তেল না নিলে ডাল দেবে না! এটা তো উচিত নয়।’
এদিকে, টিসিবি প্রতি কেজি মসুর ডাল ৫০ টাকা ও প্রতি লিটার তেল ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছে।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন