নিরাপদ খাদ্য সংকট দুরীকরণই মানবাধিকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ



বিশ্বে ৬০ কোটি মানুষ ভেজাল ও দূষিত খাবারের কারণে প্রতিবছর অসুস্থ হন। ভেজাল খাদ্যের কারণে শুধুমাত্র অসংক্রমিত রোগে প্রতিবছর লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারায়। বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত ভেজাল খাবার খেয়ে ৪৫ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। এমন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেও নিরাপদ খাদ্যের সংকট দুরীকরণই এখন মানবাধিকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

আজ বুধবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস-২০২০ উপলক্ষে নিরাপদ খাদ্য অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘নিরাপদ খাদ্য ও ভোগ্যপণ্য আন্দোলন বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

আয়োজক সংগঠনের সংগঠনের প্রধান নির্বাহী কামরুজ্জামান বাবলু'র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ, বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ মহাসচিব মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মো. শহীদুল ইসলাম, সামসুল আরেফীন, নোমান মোশারেফ, আব্দুল আজিজ, আলো খাতুন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্নতা অর্জন করলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারেনি। এ খাতে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাড়াবে। তাই খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ এখনই বন্ধ না হলে অচিরেই তা চীনের কোরোনা ভাইরাসের মত মহামারি আকার ধারণ করবে।

তিনি বলেন, দেশের প্রায় সকল ভোগ্যপণ্যের মধ্যে ভোজাল ঢুকে গেছে। অধিক লাভের আশায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও উৎপাদকরা খাদ্যে ভেজাল মেশাচ্ছে। শক্ত হাতে এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব না হওয়ায় তা এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে ছোট বড় সকল খাবার দোকানে ভেজাল পাওয়া মিলছে। কিন্তু সে তুলনায় আইনের বাস্তবায়ন খুবই নগন্য।

বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে সবার আগে। তাহলেই কেবল সম্ভব হবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়।

তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য দেশের মানুষের অন্যতম আকাঙ্ক্ষার বিষয়। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে আইনের প্রয়োগসহ তথ্য-উপাত্তের জন্য দেশে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষাগার স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপদ খাদ্যের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে।

গণ-আজাদী লীগের মহাসচিব মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, আজকে সিরিয়া, ইয়েমেনসহ আফ্রিকার অধিকাংশ দেশেই মারাত্বক খাদ্য সংকট বিরাজ করছে। সেখানে মানবতা এখন ধুকে ধুকে মরছে। অথচ বিশ্ব মোড়লরা ছুটছেন তাদের ক্ষমতার পিছনে।

তিনি বলেন, ভেজাল খাদ্য রোধে একাধিক আইন থাকলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে এক শ্রেণীর অসাধূ ব্যবসায়ীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের প্রধান নির্বাহী কামরুজ্জামান বাবলু বলেন, প্রতিদিন খাবার গ্রহণের সময় নানা প্রশ্নে জর্জরিত হচ্ছি আমরা। যা খাচ্ছি তা বিষ নয় তো? ফলমূলে কেমিকেল, মাছে ফরমালিন, মাংসে ক্ষতিকর হরমোন, শাকসবজিতে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ- এ ধরনের অনেক সংশয় ও আতঙ্কের মধ্যেই আমরা বেঁচে আছি।

তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য পাওয়া মানুষের মৌলিক মানবাধিকার। স্বপ্ন প্রতিদিন সরকার, গণমাধ্যম, কৃষক, ভোক্তা-সবার কাছ থেকে নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে শেখার চেষ্টা করে। খাদ্যের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার জন্য কাজ করছে স্বপ্ন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন