বিশেষ প্রতিনিধি :মেজর (অব.) সিনহাকে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রেই হত্যা করা হয়েছে। কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারার আদালতে মামলার অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে। আর তাতেই বিষয়টি উঠে এসেছে। পরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) -এর মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং কার্যালয়ের পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তিনি বলেন, মূলতঃ টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ‘কায়েম করা রাজত্ব’ ও ইয়াবা পাচার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য জেনে যাওয়ায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি নিশ্চিত করে জানান যে সুনিশ্চিতভাবে মেজর সিনহার টিমের ল্যাপটপে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে স্পর্শকাতর কিছু ডিজিটাল কন্টেন্ট ছিল যা সিনহা হত্যাকান্ডের পরবর্তি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে মাদক উদ্ধারের নাটকীয়তা সৃষ্টি করে ওসি প্রদীপ তুলে নিয়ে যায় ও নষ্ট করে ফেলে। মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকান্ডের বিষয়ে মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে আশিক বিল্লাহ জানান, আদালতের নির্দেশের চারটি মামলারই তদন্ত করেছে র্যাব। এর মধ্যে তিনটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। আর নিহত মেজর সিনহার বোনের করা হত্যা মামলায় আজ রবিবার চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে। তদন্তকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিরপেক্ষভাবে মোট ৮৩ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে গ্রেফতারকৃত ১৪ আসামি ও একজন পলাতকসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৯ জন পুলিশ সদস্য, তিনজন এবিপিএন সদস্য এবং তিনজন বেসামরিক লোক। গ্রেফতারকৃতদের ১২ জনই এরই মধ্যে নিজেদের দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ এবং এক পুলিশ কনস্টেবল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি জানান, ৭ জুলাই নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও ধারণের জন্য টেকানাফ যান যান মেজর (অব.) সিনহা। সেখানে তিনি মেরিনা রিসোর্টে অবস্থান করেন। পরে স্থানীয়দের সাথে সুসম্পর্কের জেরে ওসি প্রদীপের অপকর্ম জানতে পারেন সিনহা। বিষয়টি জানতে পেরে ওসি প্রদীপ মেজর (অব.) সিনহাকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেন। পরে জুলাইয়ের মাঝমাঝিতে টেকনাফ থানায় এসআই লিয়াকতসহ আরও ৫জন পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে এক গোপন বৈঠকে মেজর (অব.) সিনহাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন ওসি প্রদীপ। সেই সূত্রেই পরে ৩১জুলাই সিনহাকে হত্যা করা হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন