জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে আবারো রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
তিন দিনের রিমান্ডের জন্য কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় দুজনকে সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়। এরপর তাদেরকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে নেওয়া হয়। পরে বিকাল পৌনে ৪টা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ। বিকাল ৫টায় জিজ্ঞাবাসাদ শেষে দুজনকে রমনা থানায় নেওয়া হয়।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৪ ডিসেম্বর পাপিয়া ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
এর আগে গত ২০ জুলাই বিশেষ ব্যবস্থায় পাপিয়া ও তার স্বামী মো. মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীকে কাশিমপুর জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ৪ আগস্ট পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্ট (খাবার), রেস্টুরেন্ট (মদ), স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওই সময়ে ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন, যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি।
এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগ করা এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশানে বিনিয়োগ করা ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও তার স্বামীর নামে জমা করা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে। এভাবে মোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়, যার আয়ের উৎসের স্বপক্ষে কোনো দালিলিক প্রমাণ না পাওয়ায় পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
গত ১২ অক্টোবর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামীকে সর্বোচ্চ ২০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন