সংগ্রাম স্বাধীনতায় একাকার শেখ মুজিবুর রহমান

মিজানুর রহমান মিজান  ||

এ পৃথিবীর ইতিহাসে মানব মুক্তি ও স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে যে কয়েকজন বিশ্বখ্যাত নেতা রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন নেতা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।বাংলা, বাঙালী ও বাংলাদেশের ইতিহাসে নামটি যুক্ত থাকবে উদীয়মান সোনালী সূরের মতো দেদীপ্যমান।বঙ্গবন্ধু শুধু মাত্র একটি নাম নয়, ব্যক্তি নয়। তিনি জাতি সত্ত্বার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ব্যপ্ত একটি বৃহৎ একটি সুবিশাল প্রতিষ্ঠান সমতুল।একটি সার্থক জনযুদ্ধের অবিসংবাদিত রাষ্ট্রনায়ক। যিনি বঙ্গবন্ধু উপাধিতে হয়েছিলেন ভুষিত।কারন তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ও বাঙালীর প্রাণ।যার সাতই মার্চের ভাষণে একটি জাতি হয়েছিল একত্রিত মোহময়ী যাদুকরের যাদু মন্ত্রের ন্যায় উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত। এদেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শ্রমিক, মজুর, কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি, ফকির, যুবক, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ, সংস্কৃতি কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষকে যিনি আন্দোলন মুখী ও মুখর করে তোলার সক্ষমতা অর্জন করেছিলেন। বাঙালী জাতি সত্ত্বাকে অনুপ্রাণিত, উজ্জীবিত ও জাগ্রত করে মুক্তিকামী মানুষে করেছিলেন পরিণত।যে প্রেমে মুক্তিকামী মানুষ দেশকে শত্রু মুক্ত করতে অস্ত্র হাতে নিয়ে নির্ভীক চিত্তে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা আনতে সক্ষম হয়। 

     আমরা যে বাঙালী, আমাদের রয়েছে স্বতন্ত্র ভাষা, স্বতন্ত্র কৃষ্টি, স্বতন্ত্র ঐতিহ্য ও সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি জাতি সত্ত্বা।সে সাথে সব কিছুই ছিল ভিন্নতর। একটি মননশীল ব্যক্তির দর্শন ও চিন্তাভাবনা দিয়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই এ সম্পর্কে ছিলেন অতি যত্নবান ও সচেতন।যে কারনে আমরা বাঙালী পরিচয় দিতে হলাম অগ্রযাত্রার পথিক, তখন থেকেই আমরা/ আমাদের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা ও হল জাগ্রত মহিরুপে।সেজন্য আমরা যদি বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি না বলি, তবে তা হবে কৃপণতার সামিল। সত্যিকার অর্থেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি।বাংলাদেশকে অনেকেই চিনত না, কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সকলেই চিনত।যিনি সারাটি জীবন সংগ্রাম করে, এমন কি নিজের জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা ও আত্মমুক্তির মহাকাব্য রচনা করে গেছেন তা অবিনাশী। 

     মুক্তি যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ দেয় আত্মাহুতি। অনেক মা-বোনের সম্ভ্রম হয় লুণ্ঠিত।অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে গৃহহারা করে। স্বাধীনতা অর্জনের অন্তিম মুহুর্তে ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করে একটি জাতিকে করতে চেয়েছিল পাক হানাদাররা উজ্জীবনী শক্তির বিনাশ।সর্বোপুরি ১৫ই আগষ্টে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস পাল্টানোর পায়তারা করে কিছু সংখ্যক মীরজাফর।ওরা কেড়ে নিতে চেয়েছিল সবটুকু আলো, সব সম্ভাবনা, সকল দৃষ্টিভঙ্গি। তা আমাদেরকে ভুলে গেলে চলবেনা। থাকতে হবে সজাগ ও সচেতন।বঙ্গবন্ধুকে পরিপূর্ণ ভাবে তুলে ধরা, তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয় যে কারো পক্ষে অতি সহজে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেকে অনেক লেখা লিখেছেন।বিখ্যাত কবি লিখেছেন কবিতা, গীতিকার লিখেছেন গান, চিত্রকর এঁকেছেন চিত্র। 

    আজ ১৫ই আগস্ট।মর্মান্তিক ও বেদনা বিদুর একটি দিন।ইতিহাসের শোকাবহ সাক্ষী ও স্বাক্ষরতার দিন।জাতীয় শোক দিবস।এদিনে জানাই বঙ্গবন্ধুকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা, কামনা ও প্রার্থনা করি আল্লাহর দরবারে এদিনে সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত।  

    বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। বাঙালী একটি স্বাধীন জাতি। এদেশের সংগ্রাম ও স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সত্যিকার অর্থেই একাকার। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন।বাংলাদেশ, এ দেশের সংগ্রাম, এদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, লাল সবুজের পতাকার সাথে, সকল কিছুর সাথে বঙ্গবন্ধুর নাম স্বপ্রতিভ নাম ও স্মৃতি বিজড়িত, ওতোপ্রোত ভাবে সম্পৃক্ত।  

লেখক মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক সভাপতি বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব, বিশ্বনাথ সিলেট।  

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন