বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৪০ বছর আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতো বাংলাদেশ : আমির হোসেন আমু


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৪০ বছর আগেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতো।  

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম আয়োজিত “বিজয়ের ৪৯ বছরে পাকিস্তানের চেয়েও সমৃদ্ধি, ঐতিহ্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে এগিয়ে বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

আমির হোসেন আমু বলেন, ১৯৭২ সালে চট্টগ্রামের বেতবুনিয়ায় বঙ্গবন্ধু যে স্যাটেলাইটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন ৪০ বছর পর তার উৎক্ষেপণ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেমে যায় উন্নয়নের চাকা। স্বাধীনতার ৪৯ বছরের মধ্যে ৩৪ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছিলো মূলত স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির হাতে। তারা দেশের উন্নয়নের জন্য কিছুই করার চেষ্টা করে নাই।

আমির হোসেন আমু বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন তাঁর সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাত্র কয়েক বছরে এই যদি হয় উন্নয়নের চিত্র, তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যায়, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এখন উন্নয়নশীল কিংবা মধ্যম আয়ের দেশ নয়, পৃথিবীর সকল উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে থাকতো বাংলাদেশের নাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বলেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে এই চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশসর্বদিক থেকে পাকিস্তানকে পিছনে ফেলেছে বাংলাদেশ - মাথাপিছু আয় বাংলাদেশ ২০৬৪, পাকিস্তান ১১৩০ - জিডিপি প্রবৃদ্ধি করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশ ৫.২ পাকিস্তান -০.৪ - বাংলাদেশে রিজার্ভ আছে ৪২ বিলিয়ন কোটি ডলার, পাকিস্তানের ২০ দশমিক ৮ বিলিয়ন - বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ বছর পাকিস্তানের ৬৭ বছর - পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ২৫ জন, পাকিস্তানে হাজারে ৫৯ জন - বাংলাদেশে শিশু প্রাথমিক শিক্ষাপর্ব শেষ করছে ৯৮ শতাংশ সেখানে পাকিস্তানে ৭২ শতাংশ - বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা ৪৪ পাকিস্তানে ২২ টি।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ সোস্যাল এক্টিভিস ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, সম্প্রীতির অন্যতম পীঠভূমি হলো বাংলাদেশ। এটি আামাদের গৌরব। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ হয়েও মাঝে মাঝে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে। এ দেশে মানুষ সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের চেতনা এখনও উজ্জ্বল। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সব ধর্মের মানুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, পাকিস্তান শোষকদের বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর হলেও একটি অপশক্তি এখনও মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অস্বীকার করছে।

তিনি বলেন, ভাস্কর্যের বিরোধিতার আড়ালে তারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করছে। ইসলাম কখনও ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে নয়, ইসলাম পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, আসেন, বসুন, আমরা দেখিয়ে দিব, কোরআন-হাদিসে ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে নয়। মাদরাসায়ও জাতীয় সংগীত গাইতে হবে, দেশের পতাক উড়াতে হবে। এ দেশ সকল মানুষের, সব ধর্মের। সবাই মিলেমিশে আমরা এ দেশ গড়তে চাই।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ড. একে এম ইয়াকুব হোসেন, ড. বদরুজ্জামান ভুঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন ভুঁইয়া, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম এ জলিল, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা বদিউল আলম বদি, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ, ন্যাপ ভাষাণীর চেয়ারম্যান এম এ মোস্তাক, ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মহিউদ্দিন ফারুকী, মাওলানা ফজলে রাব্বী, মিজানুর রহমান মিজু, অধ্যক্ষ মোল্লা শহীদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট দুলাল মিত্র, সাংবাদিক রাহাত হুসাইন প্রমুখ।

 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন