শমশেরনগর-মৌলভীবাজার সড়ক বছর জুড়ে ‘আলোচিত’

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানীকারক চাতলা-শমশেরনগর-মৌলভীবাজার সড়কটি গত চার বছর আগেই ভেঙ্গে পড়ে। সড়কটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম হয়। বিদায়ী বছরে গোটা মৌলভীবাজার জুড়ে দুর্ভোগ কবলিত সড়ক নিয়ে আলোচিত ছিল লোক মুখে।

জনসাধারণের চরম ভোগান্তি পাওয়া সড়কে গত দু’বছর ধরে প্রায় ৫০ শতাংশ পাথরের কাজ শেষ হয়েছে। তবে এখনও জনসাধারণের দুর্ভোগ মুছেনি। বছর জুড়ে আলােচিত সড়কটিতে আসা যাওয়া করলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন যাত্রী সাধারন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শমশেরনগর-মৌলভীবাজার-চাতলাপুর সড়কের ৩৪ কি.মি. এর মধ্যে ২০ কি.মি. সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সনে। প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ হওয়ার পর থেকেই ভাঙ্গাচুরা সড়ক ফেলে রাখা হয়। এরফলে বৃষ্টিপাত ও যানবাহনের চাপে সড়কের বালু, পাথর সিটকে পড়ে পুরো সড়ক জুড়ে ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরও পূর্বে দু’বছর ধরেই ২০ কি.মি. সড়কে ইট-সুরকি দিয়ে গর্ত ভরাট করার চেষ্টা চলে।

এখনও সড়কে নিরাপদে গাড়ি চালাতে চালকদের যেমন সতর্ক থাকতে হচ্ছে, তেমনি যাত্রীরা সারাক্ষণই থাকেন ঝাঁকুনি মধ্যে। যানবাহনের ঝাঁকুনিতে অতিষ্ট হচ্ছেন যাত্রীরা। কেউ কেউ অসুস্থ্য হয়েও পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে বিস্তর।

জেলা সদর সাথে যোগাযোগের ও ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানীকারক গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে পিচঢালা উঠে স্থানে স্থানে ভয়ানক গর্তের সৃষ্টি হয়। গত চার বছর যাবত সড়ক দিয়ে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। মানুষের মুখে মুখে সরকার, এমপি ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের দোষারূপ ও গালিগালাজের কোন শেষ ছিল না। ভাড়া গাড়িতে উঠলেই লোকমুখে শুনা যেত মানুষের এসব কথাবার্তা।

২০১৯ সনের নভেম্বর থেকে ঠিকাদারের তত্ত্বাবধানে সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হলেও গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে প্রথম দফায় প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ শেষে পরিত্যক্ত থাকায় বৃষ্টিপাত ও যানবাহনের চাপে বড় বড় গর্ত ও পাথরের ঝাঁকুনিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন যাত্রী ও চালকরা। অনেক যানবাহনেরই ক্ষতি গুণতে হয়েছে।

এ সড়ক দিয়ে ভারতের কৈলাশহরের চাতলা শুল্ক স্টেশনের মধ্যদিয়ে বিভিন্ন ধরণের পণ্য আমাদানি-রপ্তানী করা হয়। জেলা সদরের এই সড়কে তিন উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক লোকের যাতায়াত। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ সম্পন্ন না করায় ক্ষুব্দ এলাকাবাসী।

মৌলভীবাজার কলেজ ছাত্র কামাল আহমদ, অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম খান, ব্যবসায়ী মোস্তাকিম হোসেন মিলাদ, নুরুল হাসান মিসবা বলেন, এতোদিনেও রাস্তার সংস্কার কাজ হয়নি। অথচ অসুস্থ্য কিংবা গর্ভবতী রোগীদের নিয়ে এই রাস্তায় যাতায়াত করা সম্ভব হয়না। অনেকে বাধ্য হয়েই শ্রীমঙ্গল শহর ঘুরে এখনও মৌলভীবাজারে আসা যাওয়া করেন।

 সূত্রে জানা যায়, সড়কের সংস্কার কাজের দায়িত্ব পায় এম.আর ট্রেডিং। ৪২ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হলেও পরে বন্ধ হয়ে পড়ে। ৩৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার এই সড়কের ২০ কি.মি. এলাকার বিভিন্ন অংশে পাথরের কাজ প্রায় ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে সড়কে যেসব বাজার রয়েছে ও যেসব স্থান বন্যায় তলিয়ে যায় সেসব স্থানেও কাজ হচ্ছে না। সেসব স্থানে আরসিসি ঢালাই ও উঁচু করে পুন:নির্মাণ কাজ হবে।

এব্যাপারে এম.আর ট্রেডিং এর ঠিকাদার মুহিবুর রহমান কোকিল জানান, কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় পুণরায় সময় চেয়ে আবেদন বাড়ানো হয়। ২০ কি.মি. সড়কের কাজও চলছে। অনেকটা এগিয়ে গেছে।

সড়ক ও জনপথ মৌলভীবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম বলেন, বৃষ্টির জন্য কাজ সম্পন্ন হয়নি। সড়কের ২০ কি.মি. কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ শতাংশ পাথরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে আগামী দু’তিন মাসের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন