রাজধানীর কলাবাগানে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল মাস্টার মাইন্ড’র ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী আনুশকাহ নূর আমিনকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ এবং ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, আনুশকাহ নূরকে ধর্ষন ও হত্যার ঘটনায় প্রমান হলো ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড হলেই ধর্ষণ বন্ধ হবে না। এর জন্য প্রয়োজন আইনের শাসন ও সামাজিক প্রতিরোধ। আনুশকাহ ধর্ষন-হত্যা সামাজিক অসহিষ্ণুতারই বহি:প্রকাশ।
শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে প্রেরিত দলের দপ্তর সম্পাদক মো. নুরুল আমান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, দেশজুড়ে একের পর এক ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে তুমুল আন্দোলনের মুখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে সরকার “ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড” করা হলেও প্রশ্ন জাগে আইন করার পরও কি ধর্ষন কমেছে ? শুধু আইন করেই কি ধর্ষন বন্ধ করা সম্ভব ? অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত না করলে আইন সংশোধন করেও কোনো ফায়দা হবে না। বিচার নিশ্চিত না করে যত কঠোর আইন-ই হোক, ফলপ্রসূ হবে না।
নেতৃদ্বয় বলেন, ধর্ষণ-নারী নির্যাতন বন্ধে সমাজে এই মেসেজ বা বার্তা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যে, অপরাধ করলে শাস্তি পেতেই হবে। সেজন্য দ্রæত বিচার নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসন, ঘটনার সঠিক অনুসন্ধান ও তদন্ত এবং দ্রæত সময়ের মধ্যে বিচার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছা জরুরি। রাষ্ট্রের উচিত হবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা।
তারা বলেন, আইন প্রনয়নের সময়ই দেশের বিশেষজ্ঞরা আশঙ্করা করেছিলেন, “শুধু মৃত্যুদন্ড যোগ করলেই ধর্ষণের বিচারের অবস্থার উন্নতি হবে না বরং অবনতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, এবং ধর্ষকরা ধর্ষনের শিকার নারীকে হত্যা করবে।” আনুশকাহ নূর আমিনকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা বিশেষজ্ঞদের সেই আশঙ্কাই প্রমানিত হলো। এই হত্যাকান্ডে প্রমানিত হলো শুধু আইন কঠোর করেই ধর্ষণ বন্ধ করা যাবে না। কঠোর শাস্তির বিধানের কারণে অপরাধীরা নিবৃত হবে সেই পরিস্থিতি এখন আর নেই। তারা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে পেশী শক্তি আর কালো টাকার মালিকদের দৌরাত্ম্য, ক্ষমতার দাপট। টাকার জোরে এবং রাজনৈতিক কারণে অনেকেই পার পেয়ে যায়। তারাও মনে করে অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে। তাই কঠোর শাস্তি তাদের মনে কোনো ভীতির সৃষ্টি করে না। আনুশকাহকে ধর্ষন ও হত্যার সাথে জড়িতরাও আধুনিক ও ধনি শ্রেনীর সন্তান বলেই মনে হয়। পলে তাদের মধ্যে টাকা ও ক্ষমতার অহঙ্কার রয়েছে। তাই তারা নিজেদের আইনের উর্দ্ধে বলে মনে করেছে। ফলে ধর্ষনের মত অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে। ধর্ষণের মতো অপরাধ প্রতিরোধে বর্তমান প্রজন্মের মনন ও মনোজগৎ পরিবর্তন করতে হবে। প্রয়োজন ব্যাপক গণসচেতনতা৷
নেতৃদ্বয় আনুশকাহ নূর আমিনকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রæত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, আসলে আমাদের সমাজটাই বর্বর ও অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। মানুষের মন-মানসিকতাও অজান্তেই অসহিষ্ণু ও নৃশংস হয়ে যাচ্ছে। সময়ের প্রেক্ষাপটে ধর্ষনের বিরুদ্ধে সামাজিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, মানুষের মাঝে নৈতিক শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন